পৃথিবীকে ভালোভাবে উপভোগ করতে গিয়েও মাঝে মাঝে আমরা আমাদের জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাই!!
পৃথিবীতে মানুষকে যতটা সম্মান শ্রদ্ধা আর প্রশংসা করা যায়, সকল প্রশংসা জানাই সেই সৃষ্টিকর্তার যিনি আসমান জমিন ও পুরা পৃথিবীর স্রষ্টা, যিনি পৃথিবীতে যত দয়া আছে তার থেকেও শ্রেষ্ঠ দয়াবান, পুরা পৃথিবীজুড়ে যত মায়া আছে তার থেকেও মায়াবান, যার গুনাগুন বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা, তিনি গুণাগুণ এর ঊর্ধে, তার সমতুল্য কেউ নেই, তিনিও কারো সমতুল্য নয়, তিনিই একমাত্র এক।
আমরা সকলেই আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে এসেছি, কিছু সাময়িক কালের জন্য আবার তার কাছে ফিরে যাবো..যেমন মনে করেন, কেউ একজন আপনাকে আর সে তার নির্দিষ্ট কিছু জিনিস কিনে আনার জন্য একটা লিস্ট দিছে এবং বাজারে পাঠিয়েছে,এখন আপনার কাজ কি বলেন তো অবশ্যই ওই লিস্ট টা নিয়ে বাজারে গিয়ে প্রথমে দেখা, আপনার লিস্টের জিনিসগুলো কোন দোকানে পাওয়া যাবে বা কোথায় পাওয়া যায দেখা তারপর ওই দোকানে গিয়ে লিস্টের জিনিসগুলো ক্রয় করে নেওয়া, এবং তারপর যে বাজারে পাঠিয়েছে তার কাছেই ফিরে যাওয়া।
কিন্তু যদি যাকে বাজারে পাঠানো হয়েছে, সে বাজারে গিয়ে সুন্দর জিনিস আর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়, আর সে ভুলে যায় তাকে কেন বাজারে পাঠানো হয়েছে, তাহলে তো সে তার কাজ এবং তাকে অর্থাৎ তার মালিক যে তাকে পাঠিয়েছে উভয়টা ভুলে গেয়ে অমান্য করল, এবং কথার খেয়ানত করল,অথচ মুমিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আমানত দারিয়তা, যা ছাড়া ঈমানই পূর্ণ হয়না,রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لَا إِيمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ.
যার মধ্যে আমানত নেই তার ঈমান নেই।
(-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৩৮৩; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩০৯৫৬)
••ঈমানের অপরিহার্য দাবি- আমানত ও বিশ্বস্ততা। ঈমানদার হলো আমীন ও বিশ্বস্ত, নীতি-নৈতিকতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তি,যার ভেতর ও বাহির সব সময় একি কখনো যে কোনো যেকোনো মুহূর্তে পরিবর্তন হতে পারে না।
খেয়ানতকে হাদীসে মুনাফেকের নিদর্শন বলা হয়েছে।
তাহলে কিভাবে তাকে বাজারের সৌন্দর্য পাকড়াও করবে! সে তার ধর্মের আলোকে কিভাবে ভুলে গিয়ে সৌন্দর্যের আলোতে ডুবে যাবে?
সময়ের পরিবর্তে এবং পৃথিবীর চাকচক্রের আলোতে পড়ে মানুষ ভুলেই গেছে নিজেদের আসল ঠিকানা, দুনিয়ার সৌন্দর্যের পিছনে পড়ে মানুষ হারিয়ে ফেলতেছে নিজেদের দ্বীন ধর্ম ও নিজেদের কালচার ও সংস্কৃতিকে, গ্রহণ করে নিচ্ছে, অন্যের সংস্কৃতিও কালচার কে, অসত্য এবং ইসলাম বিমুখ পথগুলোতে তারা হাঁটছে, এই অসত্যর পথেই হাঁটতে হাঁটতে একসময় অন্ধকারের পতিত হয়,এবং এই অন্ধকার থেকে কেউ হেদায়েত পাযে যাই এবং আবারো আল্লাহতাঁয়ালার পথে ফিরে আসে, কিন্তু কেউ আবার গুমরা হয়ে যাই, হেদায়াতে ও হারিয়ে ফেলেন,
এ পৃথিবীতে আমি আপনি সকলেই মুসাফির অল্প কিছু সময়ের জন্য আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, আবারো তার কাছে ফিরে যেতে হবে, ফিরে যেতে হবে সেখানে যেখান থেকে আমাদেরকে পাঠানো হয়েছে, আর এই পৃথিবী থেকে আমরা কিছুই নিতে পারব না, তবে আল্লাহ তায়ালা কিছু নির্দেশনা দিয়ে আমাদেরকে পাঠিয়েছেন, তার কাছে গিয়ে ওই নির্দেশনার হিসাবটা দিতে হবে অর্থাৎ উপরে যে বলছি বাজারের উদাহরণ দিয়ে, বাজার করে যদি মালিকের কাছে নেওয়া হয় আবার মালিককে সেটা বুঝিয়ে দিতে হয়, তেমন আমি আপনি পৃথিবীতে কি করতেছি কি না করতেছি আমাদেরকে কি করতে বলা হয়েছে... এসব কিছুর হিসাব আল্লাহকে বুঝিয়ে দিতে হবে, কারণ আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহ তায়ালার দেওয়া নেয়ামত ভোগ করছি, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা আল্লাহতালার ব্যাপারেই গাফেল হয়ে যাচ্ছে, জেনেও না বোঝার মত আচরণ করছি, আদেশ-নিদেশ জানার পরও অমান্য করছি, দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্যের পিছে পড়ে চিরস্থায়ী জান্নাতকে পুড়ে যাচ্ছে, ভুলে যাচ্ছি জান্নাতের নিয়ামতের কথা,
কিন্তু দুনিয়ার সৌন্দর্যের পিছে ছুটতে ছুটতে এবংনিজেকে একটু ভালো রাখতে গেয়ে ও অনেকে হেদায়েত পেয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামকে অনেক মজবুত ভাবে আটকে ধরতে পেরেছে,
আবার দেখা যাই অনেক বিধর্মী পরিবারের সন্তানও ইসলামের নিয়ম নীতি দেখে তার মন শান্ত হয় সে হিসেবে সে ইসলাম গ্রহণ করে ফেলে, এবং ধর্মকে সুন্দরভাবে পালন করে,
কারণ কোনো একসময় সত্য তাঁদের চোখের সামনে আসে,আর তখন তারা ঠিকই বুঝি যে এতোদিন যা করেছে ভুল ছিল সব, কিন্ত তখন তাঁদের অনেকের বয়স বেড়ে যায় বা সুযোগ কমে যাই, তা ও তারা এগুলোকে কোনো পরোয়া না- করে হেদায়েতকে প্রদান্য দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে এবং ইসলামের সকলে নিয়ম জানার এবং জেনে মানার চেষ্টা করে,কি সুন্দর চেষ্টা ও নিষ্পাপ মন হলে এতোদিনের সব করা কাজকে কিছু সময়ের হেদায়াতের চিন্তা দিয়ে বাবা মায়ের ধর্ম পর্যন্ত ত্যাগ করতে পারে?
তাহলে আপনি আমি কেনো নিজেদের ধর্ম বিসর্জন দিয়ে অন্য ধর্ম নিয়ে পড়ে আছি! কেনো নিজেদেকে ভুল বলে হেদাযাতের পথে হাঁটতে পারিনা!
কেনো উচু আওয়াজে বলতে পারিনা এটা আমাদের নেই এটা আমরা পালন করব না,। বা আমরা ভুলে কিছু পালন করেছি এখন থেকে আর করব না, কোন পারিনা কোনো কিছু সম্পর্কে না জানলে জানিনা বলতে!এবং কেনো জানার চেষ্টা করতে পারিনা যারা জানে তাদের কাছ থেকে!
আমাদের সকলের একমাত্র লক্ষ্যই তো হলো আল্লাহকে খুশি করা।
আমি আপনি যদি না জেনে দিন পার করে দেওয়ার চেষ্টা করি বিধর্মীদের ধর্ম অনুসরণ করে সামনের প্রজন্ম কি জানবে পরিবার থেকে?
দিন দিন ধর্মের গোড়া নরম হবে মুসলমান পরিবারে বাচ্চারা ধর্ম শিখতে যাবে বিধর্মীদের কাছে¡¡?
একজন মুসলমানের পক্ষে এর থেকে লজ্জার বিষয় আর কি আছে সৃষ্টিকর্তা এত জ্ঞান দেওয়া সত্বেও তার সাথে কিভাবে আমরা মুনাফিকি (অর্থাৎ খেয়ানত )করি, যেখানে খেয়ানতকারীর সাথে খেয়ানতের আচরণ না করতে বলা হয়েছে, এবং খেয়ানতের জবাব খেয়ানত দেয়ে দিযে না দিতে বলা হয়েছে।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
أَدِّ الأَمَانَةَ إِلَى مَنْ ائْتَمَنَكَ، وَلاَ تَخُنْ مَنْ خَانَكَ.
যে তোমার কাছে আমানত রেখেছে তার আমানত আদায় করে দাও! যে তোমার সঙ্গে খেয়ানত করেছে তার সঙ্গেও খেয়ানত করো না!
(-জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৬৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৫৩৫,,,)
আল্লাহ তাঁয়ালা এত নিয়ামত দেওয়ার পরও আমরা কিভাবে তার অশুকরিয়া রকরি কিভাবে তাকে ভুলে থাকি,আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সকল খেয়ানত থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন, আমাদেরকে প্রথমে চেষ্টা করতে হবে তারপর ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা তৌফিক দিবেন ।
Comments
Post a Comment