অন্তরে আল্লাহর ভয় যদি একবার প্রবেশ করানো যাই তাহলে নারীর ফেৎনা ও কারোকে অপরাধী করতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ।

 


হাদিস:-----

 وَعَن أُسَامَةَ بنِ زَيدٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبيِّ ﷺ، قَالَ: «مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً هِيَ أضَرُّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّساء». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ 

বাংলা অনুবাদ:- উসামাহ ইবনে যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আমার পর পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বেশী ক্ষতিকারক অন্য কোন ফিতনা ছাড়লাম না।’ 

[বুখারি৫০৯৬, মুসলিম ২৭৪০, ২৭৪১, তিরমিযি ২৭৮০, ইবন মাজাহ ৩৯৯৮, আহমদ ২১২৩৯, ২১৩২২]

 নারীশব্দটা যেমন ফেৎনার কারণ তেমন ভালোবাসা সুন্দর ও মায়ার কারণ। আকাশ  যেমন রাতে থাকে অন্ধকার  তার কোনো চিহ্ন থাকেনা যদি না চাঁদ বা তারা না থাকে তেমনি 

কোনো পরিবারের পরিবার হয়ে উঠে না ততোক্ষণ যতক্ষণ সেখানে কোনো মহিলা  না থাকে।

নারী হলো ফেটনা তাই নারীকে বেশি জানতে না আশা, বেশি জানতে আসলে ফেৎনাই পড়ে যাবে এইটাই স্বাভাবিক।

আর ফেটনায় যে পড়তেছে সেটা  যে শুধু নারীর কারণে পড়ছে বিষয়টা একেবারে এমন না।

যে যে কারণ এই ফেৎনায় পড়োক না কেনো মূল হচ্ছে আল্লাহর ভয় অন্তর থেকে দূরে সরে যাওয়া।

যার অন্তরে একবার আল্লাহ তাঁয়ালা ভয় ডুকে যাই যে কখনো কোন মহিলা বা তার রাগ বা জেদ বসত কোনো অপরাধে জোড়াবেনা।

এই প্রসঙ্গে একটা গল্প মনে করি...

••• ইরাকের বিখ্যাত আলেম মালেক বিন দিনার এর ঘটনা মনে রাখার মতো একটা ঘটনা তবে একটু সরণ করিয়ে দেয়।


*** ইরাকের বিখ্যাত আলেম মালেক বিন দিনার একবার এক বিশাল মাহফিলে বক্তব্য দিতে দাড়াতেই এক শ্রোতা বলে উঠলেন, আপনার বক্তব্য শুরু করার আগে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন। মালেক বিন দিনার প্রশ্ন করার অনুমতি দিলেন। বয়স্ক শ্রোতা বললেন, আজ থেকে দশ বছর আগে আপনাকে মাতাল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি, আপনি সে অবস্থা থেকে কিভাবে ফিরে এলেন? এবং ওয়াজ করার জন্য এখানে এলেন?

মালেক বিন দিনার কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রইলেন। তারপর বললেন- ঠিক বলেছেন, আমিই সেই ব্যক্তি। শুনুন তাহলে আমার কাহিনী: এক কদরের রাতে মদের দোকান বন্ধ ছিল দোকানীকে অনেক অনুরোধ করে এক বোতল মদ কিনলাম বাসায় গিয়ে খাবো এই শর্তে। বাসায় ঢুকেই দেখি আমার স্ত্রী নামাজ পড়ছে। আমি আমার ঘরে চলে গেলাম এবং বোতলটা টেবিলে রাখলাম।

আমার তিন বছরের শিশু মেয়েটা দৌড়ে এলো, টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে মদের বোতল মাটিতে পরে ভেঙ্গে গেল। অবুঝ মেয়েটি খিলখিল করে হাসতে লাগল। ভাঙ্গা বোতল ফেলে দিয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম। সে রাতে আর মদ খাওয়া হলোনা আমার। পরের বছর আবার লাইলাতুল কদর এলো। আমি আবার মদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। বোতলটা টেবিলে রাখলাম। হঠাৎ বোতলটার দিকে তাকাতেই কান্নায় বুক ফেটে গেল। তিন মাস হলো আমার শিশু কন্যাটি মারা গেল। বোতলটা বাইরে ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। স্বপ্নে দেখছি এক বিরাট সাপ আমায় তাড়া করছে। এতো বড় সাপ আমি জীবনেও দেখিনি। আমি ভয়ে দৌড়াচ্ছি। এমন সময় এক দুর্বল বৃদ্ধকে দেখলাম। বৃদ্ধ আমাকে বলল, আমি খুব দূর্বল এবং ক্ষুধার্ত। এই সাপের সাথে আমি পারবনা। তুমি এই পাহাড়ের ডানে উঠে যাও। পাহাড়ে গিয়ে দেখি দাউদাউ আগুন জ্বলছে। আর পিছনে এগিয়ে আসছে সেই সাপ। বৃদ্ধের কথা মতো ডানে ছুটলাম। দেখলাম সুন্দর একটা বাগান। বাচ্চারা খেলছে। গেইটে দারোয়ান।

দারোয়ান বলল: বাচ্চারা দেখতো এই লোকটিকে? একে সাপটা খেয়ে ফেলবে নয়তো আগুনে ফেলে দিবে। দারোয়ানের কথায় বাচ্চারা ছুটে এলো। তার মাঝে আমার মেয়েটাও আছে। মেয়েটা আমার ডান হাত জড়িয়ে ধরে বাম হাতে থাপ্পর দিয়ে সাপটিকে দূরে ফেলে দিলো। অমনেই সাপ চলে গেল। আমি অবাক হয়ে বললাম: মা তুমি এতো ছোট! আর এতো বড় সাপ তোমায় ভয় পায়?

মেয়ে বলল: আমি জান্নাতি মেয়ে। জাহান্নামের সাপ আমায় ভয় পায়। বাবা! ঐ সাপকে তুমি চিনতে পেরেছো?

আমি বললাম: না মা। আমার মেয়ে বলল: বাবা! এতো তোমার নফস। নফসকে তুমি এতো বেশি খাবার দিয়েছ যে সে আজ এতো বড় এতো শক্তিশালী হয়েছে, সে তোমাকে আজ জাহান্নাম পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে।

মেয়েকে বললাম: পথে এক দূর্বল বৃদ্ধ আমাকে এখানে আসার পথ বলে দিয়েছে সে কে?

মেয়ে বলল: তাকেও চিননি? সে তোমার রুহ। তাকে তো কোনদিনও খেতে দাওনি তুমি। সে না খেয়ে এতোই দূর্বল হয়ে পরেছে যে, কোন রকম বেচে আছে।

আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। সেই দিন থেকে আমি আমার রুহকে খাদ্য দিয়ে যাচ্ছি আর নফসের খাদ্য একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি। চোখ বন্ধ করলেই সেই ভয়াল রুপটি দেখতে পাই আর দেখি রুহকে। আহা! কতো দূর্বল হাটতে পারেনা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মালিক বিন দীনার।

 " নারী তো ফেৎনার কারণ মাত্র।যাদের অন্তরে একবার আল্লাহর ভয় চলে আসবে তখন সে আর কখনো খারাপ এ যাবেনা কক্ষনো না। খারাপ তার সামনে আসলে ও না।

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী জিনিষ হচ্ছে"লোহা"

যা সবকিছুকেই কেটে ভেঙে ফেলতে পারে নিজে তার জায়গায় অটল থেকে।,

আবার দেখা যাই কি লোহা থেকে ও অনেক বেশি শক্তিশালী হচ্ছে "আগুন" যা লোহাকেও গলিয়ে দিতে পারে।

 আবার খেয়াল করলে দেখা যাই আগুন থেকেও শক্তিশালী হচ্ছে-"জল"যা আগুনকেও নিভিয়ে দিতে পারে অল্প সময়ে,তার ঠান্ডা শীতলতা দিয়ে।

 আবার সেই জলের থেকেও শক্তিশালী হচ্ছে- "মানুষ"যে সেই জলকেও পান করে নিতে পারে।

 মানুষ থেকেও শক্তিশালী হচ্ছে - মৃত্যু যা মানুষের অস্তিত্বকে ধ্বংস করে দিতেপারে।

 মৃত্যুর চেয়েও বড় হচ্ছে- "দোয়া"

যা মানুষের তাকদীর পর্যন্ত বদলে দিতে পারে।


অর্থ —হে আমাদের পালনকর্তা! যেদিন হিসাব হবে আমাকে,আমার পিতা-মাতাকে এবং ঈমানদার গন কে ক্ষমা করুন।

[১৪-সূরা ইব্রাহিম -৪১]


তাই আমাদের উচিৎ আগে নিজের নফসকে হেফাজত করা, আল্লাহ ভয় ও ভালোবাসা অন্তরে পোষণ করা, আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে সঠিক ভাবে নিজের জীবন পরিচালনা করা । নয়তো চিরস্থায়ী হবে জাহান্নাম,মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুক। 

-------------------আমীন

আস্তাগফিরুল্লাহ!!আল্লাহ মাফ করুন আমাদের



Comments