হাজারটা স্মৃতি একসাথে থাক-না অল্প কিছু শব্দতে (দাওরা হাদিস শেষ হওয়ার পরের অনুভূতি.!)
১৩/১৪ বছর একি সাথে পড়া লিখা শেষ করার অনুভূতি অল্প কিছু লিখাতে তো প্রকাশ করা কখনো সম্ভব না..!
হঠাৎ সকালকে খুব মনে পড়ছে,তাই অল্প কিছু লিখলাম,,
আসলেই মাদ্রাসার জীবনটাই ছিলো বেস্ট ও সেরা। সকল বান্দুবিদের সাথে কাটানো সময় গুলোই ছিলো জীবনের সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত ও সুন্দর অনুভূতি..'
এক এক করে হারিয়ে গেছে জীবন থেকে সব ভালো অনুভূতি,,,অল্প অল্প করে না থাকার স্থান থেকে যা কিছু কুঠিয়ে নিয়েছিলাম হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে সব খানি..থেকে যাচ্ছে শুকনো ঢালের মতো ক্ষতসস্তান গুলোর যা আর কখনো শুকাবেনা জানি "
প্রতিনিয়ত মনে পরে যায় আগের সেই কাটানো এক সাথের সময় গুলোর কথা, মাদ্রাসার ওই টিনের ছোট্ট ছোট্ট ঘর গুলো থেকে শুধু করে উচু উঁচু ইমারতের চাঁদ পর্যন্ত হাজারো স্মৃতি রয়ে গেছে আমাদের ওই একই জায়গায়. শুধু নাই আমরা একে অপরের পাশে। আমাদের মাদ্রাসার বালুর কণাগুলো ও সাক্ষী থেকে গেছে আমাদের খেলার সাথী হয়ে। থেকে গেছে আমাদের দেখা শৈশবের সেই মাঠ যেখানে আমরা টিফিন ছুটিতে খেলতাম সকলে মিলে। ওই ট্রেনের রাস্তাটা সেখানে আমরা সিরিয়াল ধরে দাঁড়াতাম আমাদের শৈশবে কোন মেহমানকে স্বাগতম জানানোর জন্য, সারিবদ্ধ হয়ে ও তাদেরকে আহালান সাহলান মারহাবান মারহাবা বলেন বরণ করে নিতাম খুব আনন্দের সাথে।
এমন হাজারো একসাথে কাটানো স্মৃতি ওই মাদ্রাসাকে গিরে............
কতো আনন্দময় মুহূর্ত এমন ও কেটেছে যে কয়েকজনে মিলে সারাটা রাত গল্প করেছি তবু শেষ হয়নি আমাদের গল্প তবে রাত ফুরিয়ে গিয়েছিলো সেই রাত গুলোর।
হাজারো গল্পের সাক্ষী রয়ে গেছে আমাদের ওই নামাজ রুমগুলো, এবং ক্লাস রুম ও আমাদের ৪তলা ৫তলার সিঁড়ি গুলো নেই শুধু আমরাই ....
লেখাপড়ার জীবন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাটানো এমন সব কাটানো স্মৃতি, যা বলে লিখার মতো জানা নেই কোনো ভাষা, হৃদয়ের ভাষা কেবল হৃদয়েরই অজানা।
আগে ভাবতাম কবে যে শেষ হবে আমাদের "দাওরা হাদিস" তখনকার প্রতিটা দিন মনে হতো যেন এক একটা সপ্তাহ যাচ্ছে কিন্তু যখন সেই দাওরা হাদিস এ উপনীত হলাম তখন মনে হতো যেনো একটা ১সপ্তাহ একদিনেই শেষ হয়ে যেতো.. তখন খুব ইচ্ছে হতো দিনগুলোকে ছোট করে দেওয়ার, মনে হতো কতোই না ভালো হতো যদি এই দাওরা এ হাদিস টা আর কখনো শেষ না হতো!
দাওরায় হাদীসে পড়ার অনুভূতিটা এমন এক অনুভূতি, যারা এ পর্যন্ত পড়ালেখা করার তৌফিক পেয়েছেন একমাত্র তারাই জানে কি পরিমান শান্তি পাই এই দেওরায় হাদিসে এ। যাদের কখনো পড়ালেখার ইচ্ছা ও ছিল না অনিচ্ছাকৃতভাবে ও পড়ালেখা করেছে, তারাও যখন এই দরসে এ বসার সুযোগ পেয়ে যায়, তাদেরও তখন আক্ষেপ হয় যদি এই দাওরায়ে হাদিসটা শেষ না হতো! কারণ জীবনের ১৩ কি ১৪ টা বছর পড়ার স্বাদ এই দরসেই! এই দরসে বসার তৌফিক বা কপাল আল্লাহ তায়ালা সকলকে দেয় না কিন্তু সকলেরই ইচ্ছা থাকে এই দরসে বসার!
আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালা দয়া করে এই ভাগ্যটা আমার মতো এক নগন্য বান্দির কপাল এ ও দিয়েছেন।
সব কিছু মিলেই বান্ধুবি তুদের সকলকে খুব মিস করি জানি তোরা সকলে ও খুব মিস করোস, কিন্তু সংসার ওই পরিবার সবই তো সামলাতে হয় এক সাথে কারণ আমরা মেয়ে ২ হাতে সামলাতে হয় ১২ হাতের ও অধিক কাজ। সব শেষ এ নিজের জন্য থাকে রাতে অল্প কিছু সময় সেটা ও কেটে যাই ক্লান্ত শরীরকে বিশ্রাম দিতে গিয়ে, তবে কারণ এ অকারণে এ হাজারো ব্যস্ততা মাঝে ও সকল ঠিকই মনে পড়ে যাই। কে কিভাবে কথা বলতো কার সাথে কোন বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করতাম, কখন কিভাবে আমরা সকলে গল্প করতাম।সব থেকে ভালো কথা সেটা ছিলো সেটা হলো সকল ক্লাস এর সকলেই আমাদের ক্লাস এর মেয়েদের শুনাম করতো..!! আর বলতো ইসস আমরা যদি তাদের বা তুদের ক্লাস এর মেয়ে হাতাম বা হতে পারতাম....! কারণ আমাদের ক্লাস এর মেয়েরা খুব খুব ভালো ছিলো সকলেই, আমরা কখনো একেপরের সাথে জগডা করতাম না...! আমরা খুব সুন্দর করে গল্প করতাম একজন বলতাম আর সকলেই শুনতাম,,, কেউ দুস্টু করলে সকলেই হাসতাম একি সাথে খুব খুব মজার দিন ছিলো আমাদের জন্য ওই দিন গুলোর।
জানি আর কখন সেই সময় বা সেই মুহূর্ত গুলোকে ফিরিয়ে আনতে পারবোনা কিন্তু ওই সময় গুলোকে তো মনে রাখতে পারবো সেই মনে রাখা থেকেই কিছু লিখা।
কারণ এগুলো মনে রাখার পাশাপাশিই কিন্ত আমাদের মাদ্রাসায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষাকে মনে রাখতে পারবো যদি আমরা আমাদের মাদ্রাসাই কাটানো সময় কে মনে না রাখি তাহলে কিভাবে মনে রাখবো আমাদের উস্তাদ ও খালাম্মাদের নসিহত গুলোকে। কিভাবে মনে রাখবো আমরা আমাদের দৈনিক আমল গুলোকে?
অতীত ভুলে গেলে মানুষ সামনে পা বাড়ালে ভুল হতে পারে।
আর আমাদের হাজারো ভুল শুধরে দিয়েছেন আমাদের মাদ্রাসার উস্তাদ ওই খালাম্মাগণ সেই শিক্ষাকেই মনে রেখে আমাদের সকলকে পা বাড়াতে হবে সামনের দিকে। প্রতিটা কদম ফেলার আগেই আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের সেই শিক্ষার কথা যা আমরা পেয়েছিলাম মাদ্রাসার জীবন এ, যে শিক্ষা সকলে পায়না। তবে আল্লাহ যাদেরকে দয়া করে দেন তারা ছাড়া,আর আল্লাহ আমাদের সকলকে দিয়েছিলেন সেটাকে নিয়মত হিসেবে জীবনের শেষ নিঃশাস ত্যাগ করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মেনে চলতে হবে,,। আর এই মনে চলার মধ্যেই আমরা মনে রাখবো একে অপরকে ইনশাআল্লাহ।
Comments
Post a Comment