কেনো আমরা করবোনা পর্দা-সেখানে কাবা শরীফই থাকে ডাকা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহী ওয়া বারাকাতুহ্...
আমরা মেয়েরা যতো গোপনে থাকবো ততোই আমাদের জন্য ভালো আর আমরা ততোই থাকবো সুরক্ষিত।আর নিজেদেরকে যতো গোপনে রাখতে পারবো ততোই আমরা ফেতনা থেকে বাঁচতে পারব। মেয়েরা হলো সুন্দর স্বপ্ন আর সুন্দর চিন্তা ধারার মতো, যতই অদৃশ্য থাকবে ততোই সুন্দর হবে।
প্রিয় বোন আমার
একটু চিন্তা করে দেখেন, এতো বড় পৃথিবী তে
দকয়টা জিনিসই বা পর্দায় থাকে! আর সব সময় দামি জিনিস থাকে পর্দা যেমন :--
** কাবা শরিফ
** আল-কুরআন
** নারী
এখন ভেবে দেখেন একজন মেয়ে হয়ে আপনার আমার সম্মান কতোখানি!
আর আপনি বেপর্দায় চলাফেরা করেন? আবার জোর গলায় দাবী করেন সেইটায় আপনি নারীর অধিকার বা স্বাধীনতা মনে করেন! আপনি আসলে নিজের সেই মান সম্মানের মুল্যই বুঝো না!
এমন নারীদের জন্য ও তাদেরকে শ্লোগানকে জানাইও ধিক্কার যারা কোথায় নিজেদের আওয়াজকে উচু করবে আর কোথায় করবে নিচু এটায় বুঝে না, খুব আফসোস হায় তাঁদের জন্য! কারণ তারা ও বনী ইসরাই এর মতোই আচরণ করছে মান্না সালওয়া কে বাদ দিয়ে আদা রসুনকে পছন্দ করে নিচ্ছেনিজেদের জন্য।
নারীর জন্য নিরাপদ হচ্ছে, সে কোনো পরপুরুষকে দেখবেও না এবং নিজের উপরেও পরপুরুষের দৃষ্টি পড়তে দেবে না। আবার পুরুষের কল্যাণ ও এরই মাঝে যে, তারা নিজেদের দৃষ্টি সংযত রাখবে। এমন যেনো না হয়ে যায়,নিজেদের কুদৃষ্টির কারণে ফিতনায় ফেঁসে গেলো আর এই ফেৎনা তাকে কিয়ামতের দিন জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করলো।
•• ইবান বুরাইদা ( রাঃ) হতে বর্ণিত,হয়রত আলী (রাঃ)কে নবীজি করিম (সাঃ)বলেছেন, ‘হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না।
(তিরমিজি: ২৭৭৭)
আমরা অনেক গুনাহের কাজ কে তার নাম থেকে সরিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপ দিচ্ছি ও ভিন্ন ভিন্ন নামেনামে তাকে পরিচিত করছি, যেমন চোখের যেনা" এটাকে বর্তমানে চোখের নতুন নাম করণ করা হয়েছে "ক্রাশ"(নাউজুবিল্লা) নাওযুবিল্লাহ।
চোখের যেনা সব থেকে বড় যেনা।
যেখানে একবার যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো প্রতি নজর পরে যায় তাহলে সে গুণাহ্ ক্ষমা করা হবে,কিন্তু ২য় বার আবার যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নজর দেয়া হয় সেটা হয়ে যাবে চোখের যেনা। আর সেখানে ক্রাশের নাম করে কত হাজার বার মানুষ বেগানা ছেলের প্রতি বা বেগানা মেয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করছে তার কোন হিসাব নাই।
আর চোখের যিনা যে কত নিকৃষ্ট কত ঘৃণীত তা যদি আমরা বুঝতাম তাহলে হয়তো কখনো কোনো পর-পুরুষ বা পর-নারীর দিকে আমরা চোখ তুলেও তাকাতাম না।
আমরা এতোটাই নিচে নেমে গিয়েছে যে আমরা এখন এই চোখের যিনাকেও হালাল বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি।
বর্তমানে তরুন-তরুণীদের মুখের বুলি হয়ে গেছে অমুক সেলিব্রিটি আমার ক্রাস অমুক ছেলে বা মেয়ে আমার ক্রাস,কথাগুলো এখন আমাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
আর খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমরা আল্লাহর বলা হারাম কে হালাল ভেবে মেনে নিচ্ছি ;
কিভাবে আমরা আল্লাহ্র এতটা অবাধ্য হতে পারছি?? যেখানে আল্লাহর দয়া ছাড়া আমরা এক কদম সামনে পা বাড়ানো ও সম্ভব না।
সবশেষে কি তার কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবেনা?
তখন কি জবাব দিবো আল্লাহর কাছে?কি নিয়ে দাঁড়াবো তার সামনে?
একবারও কি এটা ভেবে দেখেছি?
চোখ আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্যান্য নেয়ামতে মধ্যে একটি।আমরা কি আল্লাহর নেয়ামত সঠিক ব্যবহার করছি? এই চোখ আল্লাহ দিয়েছেন ভালো কাজে ব্যবহার করার জন্য মন্দ কাজে ব্যায়া করার জন্য না।
ঠিক এমনি সব কিছুর যেমন কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তেমন মেয়েদের জন্য রয়েছে পর্দা ছাড়া বাহিরে চলাফেরা না করার নির্দেশ।একবার চিন্তা করেন যখন মৃত্যুর পরে আল্লাহ তায়ালার সামনে দাঁড়া করানো হবে তখন এই পর্দার ব্যাপারে কি জবাব দিবেন? এত শ্লোগান যে দিচ্ছেন রাস্তায় রাস্তায় নারীর অধিকার নিয়ে আপনার অধিকারটা কি আগে সেটা জানুন! কি নিয়ে করছেন এতো বাড়াবাড়ি?
"আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা দেন না।"
(সূরা বাকারাহ: ২৮৬)
"হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য ধরো, ধৈর্য প্রতিযোগিতায় দৃঢ় থেকো, প্রস্তুত থাকো এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।" (সূরা আলে ইমরান ৩:২০০)
আর সফল তো তারা যারা আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলে দুনিয়ার জীবন অতিবাহিত করে এবং আঁখিরাতের জান্নাত কে ক্রয় করে নেয়। তাই সফল হতে গেলে দুনিয়াতে একটু কষ্ট করতে হবে, আর আমাদের যেহেতু গন্তব্য এই পৃথিবীতেই শেষ নয়..
আমাদের জীবনের অস্থিরতা এ নয় যে, আমরা কী খাবে বা কি পান করবো?কী পরিধান করবে বা কোথায় বসবাস করবে?এবং আগামীকালের জন্য কী সঞ্চয় করবে বা করেছি? এসব তো হলো আমাদের নফসের অস্থিরতা? নফসের শান্তি ও অন্তরে বিদ্যমান লোভের তাড়না..
অথচ অন্তরের অস্থিরতা হলো প্রকৃত সত্যকে অন্বেষণ করা ও সঠিক জ্ঞান কে খুঁজে বের করা,মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাকে একনিষ্ঠভাবে খোঁজ করা ও তার হুকুম আহকাম কে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা ,সকল কাজে তার সন্তুষ্টি এবং বিশেষ নৈকট্য অর্জন করার চেষ্টা করা,ও কিভাবে জান্নাত লাভ করা যায় সেটাই খুঁজে বের করা হলো অন্তরের অস্থিরতা।
বর্তমানে আমাদের মতো মেয়েরা কোথায় পর্দার ভিতরে থাকার চেষ্টা করবে কিন্তু এখন তাদের অস্থিরতা কোথায় ও কোন বিষয়ে আছে পড়ে ? কোথায় নিবদ্ধ করেছ তারা তাদেরক চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু?
নারীদের অস্থিরতা হবে একমাত্র তার বরকে খুশি করার জন্য যা যা প্রয়োজন সে দিকে নজর দেওয়া,প্রভুর নিকট যে অফুরন্ত নেয়ামত রয়েছে তার জন্য পিপাসারতো থাকা,
কারণ দুনিয়ার বিকল্প আছে সেটা হলো আখেরাত,
সৃষ্টিরও বিকল্প আছে, সেটা হলো স্রষ্টা,
আর ভুলে ও বিকল্প আছে সেটা হল ক্ষমা চাওয়া,
আর যখনই আমরা দুনিয়াতে কোনোকিছু পরিত্যাগ করবো বা আল্লাহ জন্য মন চাইতে ছে কিন্তু করবো না কারণ এটা আল্লাহ নিষেধ করেছেন এই চিন্তা করে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ এর উত্তম প্রতিদান আমাদেরকে আখেরাতে দিবেন, দুনিয়ার চেয়ে ও হাজার গুন বৃদ্বি করে দিবেন,এর থেকে উত্তম আর কি হতে পারে আমাদের জন্য।
আমাদের জীবনের আর কতটুকুই-বা হায়াত অবশিষ্ট আছে, তা আমাদের কারোই জানা নাই, তাই আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা,মৃ'ত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করো, তাই প্রতিটা কাজ করার আগেই চিন্তা করতে হবে এটা করার পর বা করার মাঝেই যদি আমার মৃ'ত্যুর ফেরেশতা দরজায় আগমন করে তাহলে আমি আল্লাহ সামনে দাঁড়াতে পারবো কি?
তাই মেয়েরা পর্দাকে অমান্য বা তার নিজের ধর্মকে অমান্য করে কখনো তার সুখ তালাশ করতে পারবেনা,
** একটা গল্প দিয়ে শেষ করি,
গল্প হলেও অল্প নয়..
আব্বাসী খলিফা হারুনের প্রতি তৎকালীন বিখ্যাত পাগল বাহলুলের নসিহত।
পাগল বাহলুল: হে হারুন, হে হারুন, হে উম্মত তোমার কখন বুদ্ধি হবে...??
খলিফা হারুন : পাগল আমি, না তুমি...???
পাগল বাহলুল: আমি তো নিজেকে বুদ্ধিমান বলে মনে করি।
খলিফা হারুন : হা, হা, হা, তোমার কবে থেকে বুদ্ধি আসা শুরু করলো...??
পাগল বাহলুল : কারন আমি জানি, তোমার ঐ প্রাসাদ অস্থায়ী আর এই করব স্থায়ী। তাই আমি এই করব কে আবাদ করছি কিন্তু তুমি তোমার ঐ প্রাসাদ কে আবাদ করে এই করব কে আবাদ করছো না। তাই তুমি আবাদি স্থান থেকে অনাবাদি স্থানে যেতে চাইছো না। অথচ তুমি জানো সেই স্থানে তোমাকে যেতেই হবে। এই কবর গুলো কে আমি ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করেছি সম্মানিত এবং লাঞ্চিত ব্যক্তিরা আজ কোথায়?? রাজত্বের কারণে দাম্ভিক ব্যক্তিরা আজ কোথায়..?? কোথায় আজ অহংকারী ও প্রশংসিত ব্যক্তিগন...?? হারুন! তোমার এই কাজ গুলো কী পাগলামো নয়....??
খলিফা হারুন : ওয়াল্লাহি তুমি ঠিক বলেছো আমাকে আরো নসিহত করো
পাগল বাহলুল: আল্লাহর কিতাব কে আকড়ে ধরো। সেটাই যথেষ্ট। সেখানে যেমন রয়েছে সংবাদ তেমনি রয়েছে শিক্ষা।
খলিফা হারুন : তোমার কোন প্রয়োজন থাকলে বলো আমি তা পূর্ণ করে দিব।
পাগল বাহলুল: হে তিনটি প্রয়োজন যদি পূর্ণ করে দিতে পারো তবে ধন্যবাদ পাওয়ার উপযুক্ত হবে।
খলিফা হারুন : বলো তাহলে....!
পাগল বাহলুল: আমার বয়স বাড়িয়ে দাও।
খলিফা হারুন : আমি তা পারবো না।
পাগল বাহলুল: আমায় মালাকাল মউত থেকে রক্ষা করো।
খলিফা হারুন : আমার সে সামর্থ্য নেই।
পাগল বাহলুল : আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও জাহান্নাম থেকে বাচাও।
খলিফা হারুন : আমার সে শক্তি নেই।
পাগল বাহলুল : তাহলে জেনে রাখো, তুমি বাদশাহ নও। তুমি হলে গোলাম। আর কোন গোলামের নিকট আমার কোন প্রয়োজন নেই....।।।
একজন পাগল ও তার রবকে খুব ভালো করে চিনে কিন্তু বর্তমানে এ মানুষ এতো শিক্ষিত হয়েও তার প্রভুকে সঠিকভাবে চিনতেছে না, ধর্মকে তো মানছেই না বরং আরো কিছু বৃদ্বিকরে অন্যের ধর্মকে নিজেরদের উপরে ধর্ম হিসেবে মেনে নেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে, তাই এই সব বিধৰ্মীয় বিষয় এ বা তাদেরকে ফেৎনায় পা না দিয়ে নিজের ধর্মকে আগলে ধরে সঠিকভাবে চলা ফেরা করা।
আল্লাহ আমাদের মেয়েদেরকে পর্দা ও ইসলাম এর সকল বিষয় সঠিক ভাবে বুঝে মেনে চলার তোফিক দান করুণ।
Comments
Post a Comment