Featured

কারো বেপারে কখনো বদ-দোয়া না করা, বরং কারো বেপারে খারাপ লাগলে তারজন্য হেদায়েত এর দোয়া করা।


মানুষ এর মুখের বদ-দোয়া,                                            আমাদের অনেক এ আছে কথার শুধু শেষ উভয়টা করে বদ -দোয়া দিয়েই।

মনে হয় যেনো বদ-দোয়া ছাড়া কথা বলা সম্ভব না। আবার আর কিছু লোক আছে যারা নিজের কোনো ভুল হলে ও অন্যকে দায় করে বদ- দোয়া শুরু করে দেয়।এমন কি নিজের সন্তানদের ও বদদোয়া দিতে তাঁদের একটু মুখে বাদে না। একবার চিন্তা ও করে না যে তারা মা - বাবা হয়ে ও কিভাবে নিজের সন্তানের বেপারে এমন অনুচিত কথা বার্তা বা এতো মারাত্মক বদ-দোয়া দিচ্ছে যেখানে বদ-দোয়ার বেপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াল্লাম নিষেধ করেছেন 

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্তুতি ওপর, নিজেদের ধন-সম্পদের ওপর বদ-দোয়া কর না। কেননা হতে পারে তোমরা আল্লাহর কাছে এমন সময়ে এমন কিছু প্রার্থনা করলে, যখন তার কাছে প্রার্থনা করলে তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবেন।’ (মুসলিম)

 কোন ব্যক্তি বলতে পারে না কোন সময়টাতে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করে ফেলেন। তাই এমন অনিশ্চিত বিষয়গুলোতে আমাদের জন্য কখনো উচিৎ নয় নিজেদের সন্তানদের উপরে বদদোয়া দেওয়া। বরঞ্চ আমাদের খারাপ সময় গুলোতেও ছেলেমেয়েদের উপরে ভালো কিছু দোয়া করে দেওয়া বা তার হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। বলা তো যায় না একবার হেদায়েত আসলে আল্লাহর পক্ষ থেকে চলে আসলে সেই হেদায়েতের সুফল আপনি সারা জীবন উপভোগ করতে পারবেন, মনে অন্যরকম একটা তৃপ্তি  পাবেন।

 আল্লাহ তায়ালা তো মহান তার দ্বারা সবকিছু সম্ভব, তিনি হেদায়েত থেকে গুমরাহ করতে পারেন আবার গোমরা থেকে হেদায়েতেও ফিরিয়ে আনতে পারেন, আর দোয়া তো এমন একটা সত্যি যেটা তাদের কেউ পরিবর্তন করতে পারে, তাই আমাদের এই দোয়াকে কাজে লাগিয়ে ভালো কিছু করা উচিত হোক আমাদের নিজেদের জীবনে বা নিজেদের পরিচিত বা সন্তান সন্তাতির জীবনে। যদি কখনো এমন হয় যে আমাদের বদদো আর সুফল আমরা চোখের সামনেই দেখে ফেলি, অর্থাৎ মা বাবা বা আমরা আমাদের পরিচিত কারকে বদদোয়া দিলাম আর সে বদ দোয়া টা তার ওপরে পতিত হলো, পরে এক সময় আমাদের নিজেদেরই আফসোস হয় আমরা নিজেরাই বলতে থাকি যে ছেলেটা ভালো ছিল, বা তার অনেকগুলো ভালো গুন ছিল, তখন সব থেকে বড় দুঃখটা কিন্তু আমরাই পাই কেন আমি ও তাকে বদদোয়া দিতে গিয়েছিলাম, ফলে নিজের বদ দোয়ার কারণে নিজেই আক্ষেপ করি, তাই অধৈর্য হয়ে গেলেও কারো জন্য বদ-দোয়া না করা।

বদ-দোয়া খুব জগণ্য..!

হয়রত  নূহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামানায় তিনি       তার উম্মতদেরকে সাড়ে নয়শত বছর দাওয়াত দিয়েছিলেন,দেয়ার পর ও যখন তারা হেদায়েত হলো না তখন আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে বলল আল্লাহ সাড়ে নয়শত বছর দাওয়াত দেয়ার পরও তারা হেদায়েত হলোনা আপনি এবার তাদের ধ্বংস করুন,সাড়ে নয়শত বছর মার খেয়েছি আর সহ্য হয়না,এবার এদের ধ্বংস করুন,

আল্লাহ বলল ঠিক আছে তুমি নৌকায় উঠে যাও আমি সব গুলোকে সাইজ করতেছি, ৪০দিন ৪০ রাত পানি দিয়ে বৃষ্টি দিয়ে প্লাবন দিয়ে সবাইকে ধ্বংস করে দিলেন,

শেষ সব,আল্লাহ বললেন জ্যাতি পাহাড়ে নৌকা লাগিয়ে এবার তুমি নেমে পড়ো,

এবার আল্লাহ বললেন তোমার এখন আর কোন কাজ নেই তুমি মাটি দিয়ে হাড়ি পাতিল এগুলো বানানো শুরু করো,

হাড়ি পাতিল বানানো শুরু করলো, বানাতে বানাতে আল্লাহ কে বললেন আর কত বানাবো,

বললেন আল্লাহ আরো বানাও ৬মাস ৭মাস ৮মাস বানালেন, 

আল্লাহ এবার বললেন একটা লাঠি নাও এবং সব গুলোরে ভেঙে ফেল,নু্হ (আঃ) বললেন বানাতে বললেন আপনি আবার ভাঙতে ও বলছেন আপনি, তোমাকে ভাঙতে বলেছি ভাঙ্গ একটা ও যেন না থাকে,

এবার নিজের হাতের লাঠি দেয়ে সব গুলোকে ভেঙে ফেলল,ভাঙার পর নিরাশ হয়ে বসে আছে আল্লাহ রব্বুল আলামিন তো অন্তরের খবর জানেন,

আল্লাহ নূহ (আঃ) কে বললেন তোমার মনটা খারাপ কেন?

নুহ (আঃ) বললেন আল্লাহ আপনই তো হাড়ি পাতিল বানাতে বললেন আবার ভাংতে বললেন, কি জন্য বানাতে বললেন কি জন্য ভাংতে বললেন কিছুই বুজলাম না,এত যত্ন করে বানাইলাম এত কষ্ট করলাম,মনের ভিতর বড় কষ্ট লাগছে, ভেঙেই যখন ফেলবেন বানানোর তো দরকার ছিলোনা,আল্লাহ বললেন ভালো বলেছো এবার আসো আমার যুক্তিতে,

বল তুমি হাড়ি পাতিল যে বানিয়েছ খাওয়াইছিলে কয়দিন?বল কয়দিন লালন পালন করেছিলে?বাতাস দিয়েছ কয়দিন সূর্যের আলো দিয়েছ কয়দিন?

আল্লাহ বললেন নুহ মাত্র ৬ মাস কষ্ট করে হাড়ি পাতিল ভাঙতে যদি তোমার এত কষ্ট লাগে ৫০ বছর ৭০বছর ১০০বছর খাওয়ানো পড়ানো লালন পালনের পর আমার বান্দাদের মারতে আমার কি একটু ও মায়া লাগেনি,আমি আল্লাহর কলিজায় কি ব্যাথা লাগেনাই।

আমি আল্লাহ যদি হাজার বছর ও ওদের বসে বসে খাওয়াতাম মৃত্যুর আগ মুহুর্তে যদি আমার কাছে ক্ষমা চাইতো আমি তাদের মাপ করে দিতাম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজ সন্তান-সন্তুতি, ধন-সম্পদসহ কারো ব্যাপারে যে কোনো সময় বদ-দোয়াকরা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। সবার জন্য কল্যাণের দোয়া করার তাওফিক দান করুন।

Comments