Skip to main content

Featured

কারো বেপারে কখনো বদ-দোয়া না করা, বরং কারো বেপারে খারাপ লাগলে তারজন্য হেদায়েত এর দোয়া করা।

মানুষ এর মুখের বদ-দোয়া,                                            আমাদের অনেক এ আছে কথার শুধু শেষ উভয়টা করে বদ -দোয়া দিয়েই। মনে হয় যেনো বদ-দোয়া ছাড়া কথা বলা সম্ভব না। আবার আর কিছু লোক আছে যারা নিজের কোনো ভুল হলে ও অন্যকে দায় করে বদ- দোয়া শুরু করে দেয়।এমন কি নিজের সন্তানদের ও বদদোয়া দিতে তাঁদের একটু মুখে বাদে না। একবার চিন্তা ও করে না যে তারা মা - বাবা হয়ে ও কিভাবে নিজের সন্তানের বেপারে এমন অনুচিত কথা বার্তা বা এতো মারাত্মক বদ-দোয়া দিচ্ছে যেখানে বদ-দোয়ার বেপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াল্লাম নিষেধ করেছেন  হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্তুতি ওপর, নিজেদের ধন-সম্পদের ওপর বদ-দোয়া কর না। কেননা হতে পারে তোমরা আল্লাহর কাছে এমন সময়ে এমন কিছু প্রার্থনা করলে, যখন তার কাছে প্রার্থনা করলে তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবেন।’ (মুসলিম)  কোন ব্যক্তি বলতে পারে না কোন সময়টাত...

শাবান মাসের গুনাগুন।


 আলহামদুলিল্লাহ শাবান মাস আমাদের  মাঝে উপস্থিত।

এই মাস আমলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস, আমাদের উচিত এই মাসটাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা, এ মাসের আমল গুলো ভালো করে জেনে নেওয়া,

আরবিতে এই মাসটির নাম হলো:-  ।                    (আশ শাবানুল মুআজজম ) মহান শাবান মাস। ••শাবান’ শব্দের অর্থ হলো দূরে ও কাছে, মিলন ও বিচ্ছেদ ইত্যাদি। 

••শাবান  মাস অর্থাৎ দুইটি  অভিন্ন জিনিস তবে তাঁদের কাজ একি।যেমন একি মায়ের ২টি সন্তান, প্রত্যেকের চেহারা অভিন্ন হলেও তাদের মা বাবা একজনই। 

     শাবানা মাসের আরেকটা আর একটা অর্থ হল : মধ্যবর্তী সুস্পষ্ট।   কারণ এই মাসটা রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের মাস,তাই এই মাসকে শাবান মাস বলে নামকরণ করা হয়।

 (লিসানুল আরব, ইবনে মানজুর রহ.)।

 আর আমরা সেই ভাগ্যবানরা, কারণ একটা বছর পার হলেই আর একটা বছর আসে। আর একটা বছর থেকে আর একটা বছরে পার হতে অনেকটা সময়ও লাগে, প্রতিটা বছরে যতগুলো মানুষ পৃথিবীতে আসে, তার থেকে দ্বিগুণ মানুষ পৃথিবী থেকে চলে ও যায়, পৃথিবীতে আসার জন্য একটা সিরিয়াল আছে, ধরুন প্রথমে দাদা আসছে এই সুন্দর ভবনে, এর পরে আমাদের বাবা আসছে, বাবা আসার পরে আমি আপনি এই সুন্দর পৃথিবীতে কিছু দিনের জন্য বাসবাস করতে আসছি,।                                           কিন্তু থেকে যাওয়ার জন্য কোন সিরিয়াল থাকে না, দাদা বা বাবা পৃথিবীতে আগে আসলে ও দাদা এবং বাবার  আগে আপনি -আমিও চলে যেতে পারি, তাই একটা বছর পার করে আর একটা বছরে আসা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার, মুখে বলতে যতটা সহজ বছরটা শেষ করা এতো টা সহজ না। গত শাবান মাসে আমাদের মাঝে অনেকে ছিল কিন্তু এ বছর এই শাবান মাসে অনেকে নাই. চলে গেছেন না ফেরার দেশে. আমরাও তাদের সাথে নাই. তাদের সাথে আছে শুধু তাদের আমল, আর পৃথিবীতে রেখে যাওয়া তিনটা সম্পদ।          ১. নেককার সন্তান                                                   ২. উপকারী জ্ঞান                                                     ৩. সাদকায়ে জারিয়া 

  এই তিনটা জিনিস ছাড়া পৃথিবীতে আমরা আর কিছুই রেখে যেতে পারি না, আবার পৃথিবী থেকে কিছু নিয়েও যেতে পারি না আমল ছাড়া, যতটুকু আমল করা হবে পৃথিবীতে ঠিক ততটা আমলে নিজের সাথে থাকবে, আর পৃথিবীতে আমাদেরকে পাঠানো হয়েছে এই আমলটা করার জন্যই, হ্যাঁ চলাফেরার জন্য যতটা সময় ব্যয় করা প্রয়োজন,এই সময়টা তো ব্যয় করতে হবে, কিন্তু এই সময় টার পরে যে সময়টা থাকবে সেই পুরা সময়টাই আমলের মাধ্যমেই কাটাতে হবে, তবে হ্যাঁ আমরা তো আমল করছি, আমল করার মধ্যেও কিছু উত্তম মাস রয়েছে, সেগুলো আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে, যেমন:- মনে করেন আমরা প্রতিদিন চা খাই তাতে আমাদের কি কি খরচ হয়? চা পাতা, দুধ, চিনি, আর পানি।

 পানি তো সবসময় অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করি, চিনি তো চিনি থাকে তবে দুধ আর চা পাতার ক্ষেত্রে আমরা খেয়াল রাখি কোন চা পাতা দিয়ে চা খেলে ভালো হয় একটু খাড়ও হয়। কোন দুটা যাতে ব্যবহার করলে চা টা মজা হয়, ইত্যাদি বিষয়গুলা আমরা মাথায় রাখি। ঠিক ওই ভাবে আমরা তো আমাদের আমল গুলো প্রতিনিয়তি করছি, যেমন ফরজগুলো আদায় করছি,নফল আদায় করছি,মাঝে মাঝে তাসবিহ পড়ছি, রোজা রাখতেছি, তেলাওয়াত করতেছি, সেই হিসেবে আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে কোন মাসে এগুলো করলে বেশি উত্তম, এই হিসেবে আমাদের আমল করতে হবে,

 পুরাটা বছরের মধ্যে আমাদের প্ৰিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, রজক এবং শাবান মাস কে অন্য মাসের থেকেও বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন আমল করার ক্ষেত্রে।

••হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা রাখতে থাকতেন, যাতে আমরা বলতাম যে, তিনি (এ শাবান মাসে) আর রোজা ছাড়বেন না; আবার তিনি রোজা ভাঙ্গতে শুরু করতেন, যাতে আমরা বলতাম যে, তিনি (এ শাবান মাসে) আর রোজা রাখবেন না।

••আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমজান মাস ছাড়া আর কখনো পূর্ণ মাস রোজা রাখতে দেখিনি। আর তাঁকে শাবান মাস ছাড়া কোনো মাসে এতো বেশি রোজা রাখতেও দেখিনি। হাদিসে পাকে এসেছে-

••অন্য বর্ণনায় তিনি (আয়েশা) বলেছেন,        রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবানের পূর্ণমাসই রোজা রাখতেন। তিনি শাবানের রোজা রাখতেন তবে অল্প কিছু দিন (রাখতেন না)। (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, বাইহাকি, আবু দাউদ, মিশকাত)

  এ হাদিসগুলো দ্বারা আমরা এটাই বুঝলাম যে এই মাসটাতে  আমাদের বেশি বেশি রোজা রাখা প্রয়োজন, যেমন আমাদের মেয়েদের অনেকগুলো রোজা থেকে যায় রমজানের যা আমরা কাজা করবো করবো বলে বলে করা হয় না, এ মাসটাতে আমরা সেই রোজা গুলো রেখে দিতে পারি, নফল রোজা রাখার নিয়ত ছিল রাখতে পারেন নাই বা অর্ধেক রেখেছেন ভেঙ্গে ফেলছেন তারপরে আর ওই রোজাটা রাখা হয় নাই বা নিয়ত করেছেন কোন একটা বিষয়ের জন্য কিন্তু পরে ওই রোজাটার কথা মনে ছিল না সে হিসেবে সে রোজাটা আর রাখা হয় নাই, এভাবে আমাদের মনে না থাকা অনেক রোজা সেগুলো মনে করে এই মাসটাতে আদায় করে নেওয়া, আর যদি এমন কোন রোজা না থাকে তাহলে রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য কিছু রোজা রাখা যায় এ মাসটাতে,

এই শাবান মাস হলো নবীজির প্রতি  অগাধ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও প্রেম-ভালোবাসা প্রদর্শনের মাস। তা হতে হবে সুন্নত অনুশীলনের মাধ্যমে। 

হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘হে বত্স! যদি পারো এভাবে সকাল ও সন্ধ্যা পার করো যেন তোমার অন্তরে কারও প্রতি হিংসা না থাকে, তবে তাই করো।’ অতঃপর বললেন, ‘এটাই আমার সুন্নত আদর্শ, যে ব্যক্তি আমার সুন্নত অনুসরণ করল, সে প্রকৃতপক্ষে আমাকে ভালোবাসল; যে আমাকে ভালোবাসল, সে জান্নাতে আমার সঙ্গেই থাকবে।’ ” (মিশকাতুল মাসাবিহ, তিরমিজি শরিফ: ৩৬: ১৭৫)।

আর এই মাসের মধ্যে একটি মর্যাদাপূর্ণ রাত রয়েছে,

যার কথা কোরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন::-- ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে, সেসবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও, তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে।’

 (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)। 

অনেক মুফাসসিরিন বলেন, এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসের পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)।

 তাই শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫ তারিখের রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়।

 শবে বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে।

 শব অর্থাৎ রাত বা রজনী 

আর বরাত মানে মুক্তি 

সুতরাং শবে বরাত অর্থ হলো মুক্তির রাত। 

‘শবে বরাত’ আরবিতে হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’ তথা মুক্তির রজনী। 

হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে।

 তাই এই মাসটাকে আমাদের আমলের সাথে কাটাতে হবে। বেশি বেশি জিকির করা এবং তেলাওয়াতের মধ্যে থাকতে হবে।

ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ী, রজব আল্লাহ তাআলার মাস, শাবান নবীজি (সা.)-এর মাস, রমজান হলো উম্মতের মাস। রজব মাসে ইবাদতের মাধ্যমে মনের ভূমি কর্ষণ করা, শাবান মাসে আরও বেশি ইবাদতের মাধ্যমে মনের জমিতে বীজ বপন করা, রমজান মাসে সর্বাধিক ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে সফলতার ফসল ঘরে তোলা হয়। রহমাতুল্লিল আলামিন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশনাসংবলিত অসাধারণ আয়াতটি এ মাসেই অবতীর্ণ হয়। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.)-এর প্রতি পরিপূর্ণ রহমত বর্ষণ করেন, ফেরেশতাগণ নবীজি (সা.)-এর জন্য রহমত কামনা করেন; হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করো এবং যথাযথভাবে সালাম পেশ করো।’ 

(সুরা-৩৩ আহজাব, আয়াত: ৫৬)।

اَللَّهُمَّ بَارَكْ لَنَا فِىْ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَان

(উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’)

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজানে পৌঁছে দিন।’ (মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এই মাসের আমল গুলো ভালোভাবে জেনে আমল করার তৌফিক দান করুক।

আমীন।

Comments