Featured
- Get link
- X
- Other Apps
সুস্থ্য দেহের জাকাতের নামই হলো ফিতরা..।
তারিখ :-১৫-৩-২০২৫
আরবিতে সদকাতুল ফিতর এর অর্থ হলো :-
ঈদুল ফিতরের সদকা।
ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করা হয় বলে এই সদকাকে সদকাতুল ফিতর বলা হয়।
একে জাকাতুল ফিতর বা ফিতরাও বলা হয়, সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব।
••হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তা মুসলিমদের ওপর আবশ্যক করেছেন।
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘গোলাম, স্বাধীন, পুরুষ, নারী, ছোট, বড় সব মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ‘সা’ খেজুর, অথবা এক ‘সা’ গম জাকাতুল ফিতর ফরজ করেছেন এবং নামাজের পূর্বে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেনা।
(-সহিহ বোখারি ও মুসলিম)
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যা আদেশ করেছেন তা আল্লাহতায়ালা কর্তৃক আদেশ করার সমতুল্য।
এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন,
"যে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হুকুম মান্য করল, সে আল্লাহর হুকুমই মান্য করল। আর যে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল, আমি আপনাকে তাদের জন্য পর্যবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।
(-সূরা আন নিসা: ৮০)
**যাদের ওপর ফিতরা আবশ্যক বা ওয়াজীব।
ফিতরার নিসাব জাকাতের নিসাবের সমপরিমাণ। অর্থাৎ কারো কাছে সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় বিদ্যমান থাকলে তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হবে। যাঁর ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব, তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন, তেমনি নিজের অধীনদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন। এতে জাকাতের মতো বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়
(ফাতহুল কাদির: ২ / ২৮১)
~~মাসয়ালা:- প্রত্যেক স্বাধীন মুসলমানের ওপর ফিতরা আদায় কার ওয়াজিব। যার কাছে ঈদের দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য (ঘর, কাপড়, গাড়ি ইত্যাদি)-এর অতিরিক্ত সম্পদ থাকবে, তার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।
••আর বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষেরই ঘর. গাড়ি না থাকলে ও কাপড় কিন্তু ঠিকি থাকে। কোথায় ও গুরতে যাওয়ার জন্য থাকে কাপড় আলাদা, আবার কারো বাসায় বেড়াতে গেলে সেটার জন্য থাকে অন্যরকম কাপড়, কোন অনুষ্ঠান বা পার্টিতে যাওয়ার জন্য রাখে অন্যরকম ড্রেস, কিভাবে বিভিন্ন স্থান বুঝে কাপড় রাখে অন্যরকম তার মানে অতিরিক্ত কাপড় সবারই থাকে। তাই যাদের এমন আছেন তাদের সকলের উপরে সদকার ভিতর ওয়াজিব হবে।
""এক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া শর্ত নয়।""
( -আল জাওহারাতুন নিয়ারাহ: ১/১৭০)
~~মাসয়ালা: সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্য ওই পণ্য বছরকাল থাকা আবশ্যক নয়। যেমনটা আমরা যাকাতের ক্ষেত্রে জেনে থাকি। তাই ফিতরা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের পক্ষ থেকে তাদেরকে পিতা-মাতা আদায় করবেন।
" যে ব্যক্তি ওজরবশত বা গাফলত করে রোজা রাখেনি তাকেও সদকায়ে ফিতর আদায় করতে হবে।"
(আল জাওহারাতুন নিয়ারাহ: ১/১৭০)
~~~মাসয়ালা: যে ব্যক্তি মালিকে নেসাব অর্থাৎ (ঘর, গাড়ি. বা কাপড় ) এমন কিছুর মালিক যদি
••সে ঈদের দিনে সুবহে সাদেকের সময়ে পায় তাহলে তার ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।
••এতে বুঝা যায়, যদি কোনো ব্যক্তি ঈদের দিন সুবহে সাদেকের পূর্বে মারা যায়, তাহলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব না।
এভাবে যদি সুবহে সাদেকের পরে কোনো বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে তার পক্ষ থেকেও ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়।
•• তবে যদি কোনো ব্যক্তি সুবহে সাদেকের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে বা কোনো বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে তাহলে তাদের ওপরও ফিতরা ওয়াজিব হবে।
{ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২/৪১৭; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৯২}
** *ফিতরা আদায়ের সময় হলো,
সদকাতুল ফিতর আদায়ের দু’ধরণের সময় আছে:-
১. ফজিলতপূর্ণ সময় ও
২. সাধারণ সময়।
১. ফজিলতপূর্ণ সময়: ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজের পূর্বে--
•বোখারিতে বর্ণিত, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, আমরা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে সদকাতুল ফিতর হিসেবে ঈদুল ফিতরের দিন এক সা’ পরিমাণ খাদ্য আদায় করতাম।
•হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মানুষের ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করার আদেশ দিয়েছে।
সুতরাং ঈদুল ফিতরের নামাজ একটু বিলম্বে আদায় করা উত্তম। যাতে মানুষ সদকাতুল ফিতর আদায় করতে পারে।
২.সাধারণ সময়:-
ঈদের একদিন দু’দিন পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। তখন তা ওয়াজিব হিসেবেই আদায় হয়ে যাবে।
তবে ঈদের দিন ঈদের নামাজের পূর্বেই আদায় করা মোস্তাহাব। যদি কোনো কারণবশতঃ ঈদের নামাজের পূর্বে আদায় করতে না পারে তাহলে পরে হলেও আদায় করা ওয়াজিব; এটা কখনো নফলে পরিণত হবে না। (হেদায়া: ১/২০৮)
তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম।
চাইলে রমজান মাসেও তা আদায় করা যায়।
~~মাসয়ালা: ঈদের কতদিন পূর্বে ফিতরা আদায় করা যাবে?
এ বিষয়ে ইসলামি স্কলারদের মতভেদ থাকলেও গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে,
রমজানের পূর্বে আদায় করলেও ফিতরা আদায় হয়ে যাবে। এমনকি কয়েক বছরের ফিতরা একত্রে আদায় করলেও তা আদায় হবে। -ফাতাওয়ায়ে শামি: ২/৩৬৭
**সদকাতুল ফিতর প্রদানের স্থান বা কারা এর হকদার :-
১.দরিদ্র,
২. ঋণ আদায়ে অক্ষম,
৩. ঋণগ্রস্ত, তাকে তার প্রয়োজন - পরিমাণ দেয়া যাবে।
"এক সদকাতুল ফিতর অনেক ফকিরকে দেয়া যাবে এবং অনেক সদকাতুল ফিতর এক মিসকিনকেও দেয়া যাবে।"
{দুররে মুখতার: ২/৩৬৭}
~~মাসয়ালা: সদকাতুল ফিতর আদায়ের প্রধান স্থান হলো সে যে এলাকায় অবস্থান করছে ওই এলাকার গরীবরাই বেশি হকদার।
ওই এলাকায় সে স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী। কিন্তু যদি তার বসতি এলাকায় কোনো হকদার না থাকে বা হকদার চেনা অসম্ভব হয়, তাহলে তার পক্ষে উকিল নিযুক্ত করবে। সে উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে তার সদকাতুল ফিতর আদায় করে দিবে।
**আমরা সদকায়ে ফিতরা কেন দিবো!
আমরা নিজেরা শুস্থ ও ভালো থাকার পাশাপাশি দরিদ্রদের প্রতি সদ্ব্যবহার এবং ঈদুল ফিতরের দিনে তাদের যেনো ভিক্ষা করতে না হয়, তাদেরকে ভিক্ষা থাকে বিরত রাখা জন্য।
উদারতা-বদান্যতা ও সহমর্মিতার চর্চা করার জন্য,রোজাদারের রোজায় যেসব দুর্বলতা ও ভুল হয়, তা থেকে নিজেদেরকে পবিত্র করার উদ্দেশ্য । তারাবি নামাজ ও রোজার মতো নেয়ামত দিয়ে আমাদেরকে ধন্য করায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার জন্যই আমরা পত্যেকে নবীজি ফিতরা আদায় করতে বলেছেন।
**সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ ও কি কি কোন জিনিসের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করা হয়-
১,গম বা আটা,
২,যব,
৩, কিসমিস,
৪, খেজুর,
৫, পনির,
ফিতরার পরিমাণ কত হবে সেটি নির্ধারণ করে প্রতিটি দেশের এই পাঁচটি পণ্যের বাজার দরের ওপর ভিত্তি করে।
~~~মাসয়ালা: হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম সদকাতুল ফিতরের এক সা’ পরিমাণ আদায় করেছেন।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা জাকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক ‘সা’ খানা, অথবা এক ‘সা’ গম, অথবা এক ‘সা’ খেজুর, অথবা এক ‘সা’ পনির, অথবা এক ‘সা’ কিশমিশ দ্বারা। ’
অন্য হাদিসে আছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সা.)-এর জামানায় আমরা সদকাতুল ফিতর দিতাম এক সা' খাদ্যবস্তু, তিনি বলেন, তখন আমাদের খাদ্য ছিল যব (বার্লি), কিশমিশ-মোনাক্কা, পনির ও খেজুর। (-সহিহ বোখারি: ১/২০৪-২০৫)
বর্ণিত এ দু’টি হাদিস থেকে বোঝা যায়, কোনো খাদ্যবস্তু দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে এবং এর পরিমাণ হলো এক সা'।
মাসয়ালা: ইসলামি শরিয়া মতে আটা, খেজুর, কিসমিস, পনির ও যব ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোনো একটির মাধ্যমে ফিতরা প্রদান করা যায়। আটার মাধ্যমে ফিতরা আদায় করলে জনপ্রতি এক কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য আদায় করতে হবে। খেজুরের মাধ্যমে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য, কিসমিসের মাধ্যমে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য, পনির দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য এবং যব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।
মূল্যের দিক থেকে ওই খাদ্যবস্তুগুলোর মধ্যে তফাত থাকলেও সবচেয়ে কম দামের বস্তুকে মাপকাঠি ধরে যদি কেউ ফিতরা আদায় করে দেয়, তাহলেও তা আদায় হয়ে যাবে।
***২০২৫ সালের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা হলো:-
বর্তমান বাজারদর হিসাবে যেহেতু গমের দামই সবচেয়ে কম, তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর আধা ‘সা’ গমকে মাপকাঠি ধরে, ওই সময়ের বাজারদর হিসাবে তার মূল্য ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ ঘোষণা করা হয়। এ বছর তা জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে,
তবে এর মানে এই নয় যে ধনীরাও তাদের ফিতরা ১১o টাকাই আদায় করবে। উত্তম হলো, নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি মূল্যের খাদ্যবস্তুকে মাপকাঠি ধরে ফিতরা আদায় করা।
কেননা সদকার মূল লক্ষ্যই হলো গরিবদের প্রয়োজন পূরণ ও তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ। এ ছাড়া আদায়কারীর সামর্থ্যকেও বিবেচনায় রাখা উচিত, যদিও শরিয়তে সর্বনিম্ন মূল্যে ফিতরা আদায় করার দরজা খোলা রাখা হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনিরের হিসাবে ফিতরার আলাদা মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ চাইলে আটার হিসাবে ফিতরা না দিয়ে উল্লিখিত জিনিসগুলোর হিসাবেও ফিতরা দিতে পারবে।
***অধীনস্ত কর্মচারীদেরকে কি ফিতরা দেওয়া যাবে?? এবং তারা কি এই ফিতরা গ্রহণ করতে পারবেন?
~~উত্তর :-ফিতরা তারাই গ্রহণ করতে পারবেন, যাদের প্রতি ফিতরা প্রদান আবশ্যক নয়। এক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল পরিবারকে প্রতিদিনের ভরপেট ইফতারের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়, তিনিই ফিতরার হকদার। ধরুন, আপনার বাসার কাজে সাহায্যকারী ব্যক্তি, যার পক্ষে আপনার প্রদেয় বেতনের টাকা দিয়ে পরিবারের সব সদস্যকে প্রতিদিন ভরপেট ইফতার করানো সম্ভব হয় না, সেই ব্যক্তিকে আপনি ফিতরা দিতে পারবেন। তবে ফিতরা যেন অবশ্যই তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিকের অতিরিক্ত হয়। অর্থাৎ, ফিতরার মাধ্যমে কারও পারিশ্রমিক মেটানো যাবে না। একইভাবে, গরিব, দুস্থ, অসহায়, অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি, যাদের পক্ষে জাকাত ও সদকা গ্রহণ করা জায়েজ, তাদের ফিতরা প্রদান করা যাবে।
কারা ফিতরা পাওয়ার যোগ্য তা নিয়ে আলেমদের মধ্যে কিছু মতভেদ রয়েছে। একদল আলেম মনে করেন, যারা সাধারণভাবে সম্পদের জাকাতের হক্দার, তারা সকলেই ছাদাকাতুল ফিতরেরও হকদার। তাদের যুক্তি হলো, ফিতরাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) জাকাত ও ছাদাকা বলেছেন। তাই যেটা সম্পদের জাকাতের খাত হবে, সেটা ফিতরারও খাত হবে। ছাদাকার যেই খাতগুলো আল্লাহ পাক সুরা তওবা’য় উল্লেখ করেছেন, সেই খাতগুলো ছাদাকাতুল ফিতরের জন্যও প্রযোজ্য হবে। সুরা তওবা’য় নির্দেশিত হিসাব অনুসারে আট প্রকার লোক ছাদাকাতুল ফিতরের হকদার। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْعَامِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ فَرِيْضَةً مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ
‘ছাদাকাহ কেবল দরিদ্র, মিসকিন, (ও ছাদাকাহ্) আদায়ের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, (এবং) যাদের অন্তরে প্রীতি স্থাপন করা হয়, বন্দি মুক্ত করার জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরের জন্য, আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ফরজ। আর আল্লাহ জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।’
(আত-তওবা, ৯/৬০)।
আরেক দল আলেম মনে করেন, ছাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কেবল ফকির-মিসকিনদের হক; অন্যদের নয়। তাদের যুক্তি হলো, ইবনু আব্বাস (রা.) কর্তৃক হাদিস, যেখানে সাহাবী বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ্ পাক জাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন সিয়াম পালনকারীর অশ্লীলতা ও অনর্থক ক্রিয়াকলাপ হতে পবিত্রতা রক্ষার জন্য এবং মিসকিনদের আহারস্বরূপ...’।
যেহেতু উপর্যুক্ত হাদিসে স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে, ‘মিসকিনদের আহারস্বরূপ’, অতএব দরিদ্র, দুস্থ, অসহায় ও অভাবগ্রস্তকেই ফিতরা প্রদান করতে হবে। উক্ত মতকে সমর্থন করেছেন ইবনু তায়মিয়া, ইবনুল কাইয়িম, শাওকানি, আযিমাবাদী, ইবনু উছায়মিনসহ আরও অনেকে। অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে এই মতটি অধিক গ্রহণযোগ্য। কারণ এই মতের পক্ষে স্পষ্ট দালিলিক প্রমাণ বিদ্যমান।
বলা রাখা ভালো যে,
কারও অধীনস্থ কর্মচারী বা বেতনভুক্ত সাহায্যকারীকে বেতনের পরিবর্তে ফিতরা দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে বেতনসহ ফিতরা দেওয়া যেতে পারে। ফিতরার খাদ্যসমূহের মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম যদি ফকির-মিসকিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে তারা ফিতরার দাবিদার হবেন। বরং তারা অন্যান্য ফকির-মিসকিনদের থেকেও অগ্রাধিকার পাবেন। কারণ, এরা দ্বীনের শিক্ষা অর্জনে ও অন্যকে শিক্ষাদানে নিয়োজিত, যে গুণটি অন্যান্য ফকির-মিসকিনের নেই।
- Get link
- X
- Other Apps
Popular Posts
- Get link
- X
- Other Apps
চাঁদ রাতের গুরুত্ব ও তার গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment