Featured
- Get link
- X
- Other Apps
কবর ডাকছে আর প্রতিনিয়ত স্মরণ করছে আমাদেরকে আর আমরা দুনিয়া খুঁজে ব্যস্ত!!
আজকের সেহরিতে উঠে প্রথম খুব ভালো লাগছিলো কিন্তু উঠার পরে যখন মা বার -বার আমাকে ভাইকে ও বাবা ডাকতেছে, তখন খুব মায়া লাগলো আহঃ একদিন এই মা--টাকে ছাড়া ও রমজান পালন করতে হবে!!
কতো যত্ন নিয়ে মা সবাইকে গিরে রাখে সকলের সব প্রয়োজন পরা করা, ঘুম থেকে উঠে আমাদের খেতেই ইচ্ছা করে না, আর মা সেখানে সব কিছুই রান্না ও করে ঘুম থেকে উঠে আমরা রোয়া রাখবো যেনো ভালো করে খেয়ে রাখতে পারি, পৃথিবীর যতো মায়া মাযেরা করা আর কেউ মনে হয় এতো মায়া যত্ন করবেনা।
ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বসা ছিলাম। এ সময় জনৈক আনসারি সাহাবি তার কাছে আসে। সে রাসুল (সা.)-কে সালাম করে এবং বলে, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) সর্বাপেক্ষা উত্তম ঈমানদার কে? তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যাদের চরিত্র উত্তম। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করে সর্বাপেক্ষা দূরদর্শী ঈমানদার কে? তিনি বলেন, যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, এরাই সর্বোত্তম দূরদর্শী।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৯)
কিন্তু আমি যতো বার মৃত্যুর কথা শুরন করি ততোবার মা বাবার কথা স্মরণ করি, আর এখন যখন সেহরির সময় উঠে, প্রথমেই মনে পড়ে আমার শহীদ ভাই ও বোনেদের কথা, তাদের পরিবার ও তাদের মা বাবা ভাইদের কথা, আর চিন্তা করি তাদের মনের অবস্থা, একটা হলো মৃত্যু আর একটা হল অকাল্পনিক মৃত্যু। অর্থাৎ জুলাইয়ে আমাদের যে ভাই বোন গুলো মারা গিয়েছে, তাদের পরিবার তো এমনটা আশা করে নাই বা তারা জানত না, হঠাৎ আন্দোলন শুরু হবে, তাদের চোখের মানিকগুলো হারিয়ে যাবে, আর মৃত্যুর আগে তাদের পরিবার-পরিজন তাদেরকে এক পলক দেখার সৌভাগ্য ও অর্জন করতে পারবে না, একটু কথাও বলতে পারবে না তারা তাদের মা বাবার সাথে, শেষবারের মতো তার আত্মায় ও মা-বাবার চেহারাগুলো দেখতে পারবেনা, আর চিন্তা করি তাদের এখনের অবস্থা, সব জামিলা থেমে গেছে সবাই ফিরে গেছে তাদের নিজ নিজ মন্তব্যে, কিন্তু এখনো থামেনি কোন মায়ের ভিতরের আর্তনাদ। একটা রোজা চলে গেছে মায়েদের তাদের সন্তান ছাড়া, পরিবার পরিজন ও মায়েরা জানে তাদের সন্তান আর কখনো ফিরে আসবে না, তাও তোমাদের মন মানবে না তারা অপেক্ষা করবে তাদের সন্তানের, আহা এগুলা চিন্তা করলে খুবই কষ্ট লাগে,
অপরদিকে খারাপ লাগে আত্মীয়-স্বজনদের চলে যাওয়ার, পৃথিবীতে আসার একটা সিরিয়াল আছে কিন্তু যাওয়ার কোন সিরিয়াল নাই, পরিবারগুলোতে দেখা যায় প্রথমে সন্তান হয় এরপরে সন্তানরা বাবা হয়, আমার সন্তানেরও সন্তান হয়, কিন্তু পৃথিবী থেকে যাওয়াটা হয় অন্যরকম, দেখা যায় আগে সন্তানের সন্তানরা চলে যায় কিন্তু বাবা থেকে যায়, বা ছেলে চলে যায়, অর্থাৎ বলা যায় না পৃথিবী থেকে কে আগে যাবে কিন্তু এটা বলা যায় কে পৃথিবীতে আগে আসবে।
কাল হঠাৎ সেহরিতে বাবাকে বলে উঠলাম, যত ভালো কাজ আছে করে নাও বলা তো যায় না সামনের বছর রোজার সময় বেঁচে থাকবা, কারণ ওনার ছোট ভাই ২-১ মাস আগে মারা গেছেন, এর দ্বারা এটা বুঝাইলাম যে আল্লাহ তাআলা আমার বাবাকে দুনিয়াতে আরো ভালো কিছু করে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে, এই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে, দুনিয়ার পঞ্চাশ ষাট কিংবা ৮০ বছরের বয়সের শান্তির জন্য গোটা জীবনটার অশান্তি যেন আমরা ক্রয় করে নানি দুনিয়া থেকে।
যদি কবরবাসীদের কে বলা হতো! তারা কি চায়! তাহলে তারা অবশ্যই বলতো তারা একটা রমজানের দিন চাই, আর সেই রমজানের দিনটাতে আমি আপনি আলহামদুলিল্লাহ এখনো বেঁচে আছি, আর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রহম করে এই দিনটাতে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রেখেছেন তার ইবাদাত করার জন্য, আখেরাতের শুক তালাশ করার জন্য, কারণ দুনিয়া তো মুসলমানদের জন্য চিরস্থায়ী কিছু না, আমাদের গন্তব্য তো জান্নাত আর দুনিয়াতে আমাদেরকে সেই জান্নাতটা ক্রয় করে নিয়ে যেতে হবে, যেন অনন্তকাল শান্তিতে থাকতে পারি, তবে এই আমলগুলো খেয়াল করে করতে হবে, কারণ পুরাটা মাস আমাদের মাধ্যমে কাটিয়ে যদি আমরা শেষে জানতে পারি আমাদের আমল কবুল হয়নি তাহলে এর থেকে দুঃখের বিষয় আর কি হতে পারে।
জীবন হলো একটা নির্দিষ্ট সময়ের সীমারেখা, যা যা একটা সীমানায় গিয়ে থেমে যাবে।প্রতিনিয়ত আমাদের সেই হায়াতের সীমানা গুলোর ফুরিয়ে যাচ্ছে। আমরা মৃত্যুর দিকে আলোর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি,আর অনন্ত সেই জীবনের নিকটবর্তী হচ্ছি। অথচ আমরা কত উদাসীন! আমরা দুনিয়ার মোহের পেছনে ছুটে চলছি উড়োজাহাজের মত।
আমাদের চলাফেরা দেখে মনে হয়না আমরা যে কখনো পৃথিবী থেকে যাবো! ভুলে যাই আমরা আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের কথা।
আমরা কখনো কি ভাবি প্রতিনিয়ত যে পথের দিকে উড়োজাহাজের মত ছুটে চলছি সে পথের গন্তব্য কোথায়? পৃথিবীর রং-রসে মেতে মৃত্যুকে হয়তো ভুলে থাকা যায়, কিন্তু মৃত্যুকে এড়ানো বা মৃত্যু থেকে পালিয়ে বাঁচা যায় না। অথচ আমাদের সোনালি প্রজন্মের মানুষগুলো মৃত্যুকেই জীবনের লক্ষ্য বানাতেন। তারা ছুটতেন না আমাদের মত দুনিয়ার পিছনে, তারা চিন্তা করতেন, মৃত্যুর পর কিভাবে আলোর দিকে যাওয়া যায়, আর একবার মৃত্যু হয়ে গেলে আর তো আলোর দিকে ফিরে আসা যাবে না, তাই দুনিয়াতে সেই আলোর সন্ধান ঠিক করতে হবে।
তাই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই ছিল জীবনের চরম উদ্দেশ্য। আমরা দুনিয়ার সবকিছুর জন্যই প্রস্তুতি নিই। চাকরি, বিয়ে, ক্যারিয়ার এমনি নিত্যদিনের বাজার-সদাই করার জন্যও আমাদের একটা প্রস্তুতি থাকে যেমন এখন রমজান আসতেছে প্রতিটা ঘরেই অল্প হলেও রমজানের বাজার করা হয়েছে, অনেকে তো এক মাসের বাজারি করে ফেলছে, প্রতিদিন ইফতারের নিত্য নতুন আয়োজন, বিলাসীকথার শেষ নেই,কিন্তু প্রস্তুতি নেই শুধু মৃত্যুর জন্য!
সন্ধ্যায় বেঁচে আছি পরের দিনটা দেখতে পারবো কিনা সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই,আবার সকালে জীবিত আছি এমন লোক যে সন্ধ্যা অবধি বেঁচে থাকবে সেটাও অনিশ্চিত।
একটু আগে ফজরের নামাজ পড়ে মোবাইলটা হাতে নিলাম আর কিছুক্ষণ পরেই মাইকের মধ্যে এলাম বাজলো! একটি শোক সংবাদ, একটি শোক সংবাদ, একটি শোক সংবাদ, এরপরে মাইকে একজন বলল একটা এলাকার নাম বলে একজন লোকের নাম বলল! যিনি একটু আগে ইন্তেকাল করেছেন জোহরের পরে তার জানাজা........... ভিতরটা নড়ে উঠলো! কারণ আমি বসে বসে তখন মৃত্যুর কথা ভাবতেছিলাম, আর পোস্ট লিখতেছিলাম কিন্তু লিখার মাঝে আবারো প্রমান কানে আসলো ও চিন্তাকে জাগ্রত করলো তাড়াতাড়ি লিখা শেষ করে আমলের দিকে মন দাও মৃত্যু তোমার আসে পাশে ও ঘুরছে সময় হয়েছে বললেই তোমার জান নিয়ে নিবে এমন একটা মুহূর্ত তোমার ও আসবে, মাইকে তোমার নাম ও বলা হবে, কিন্তু তখন তুমি আর ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলার সময় টা পাবা না।
এইসব চিন্তা করছি আর ভাবছি কি দেখাবো আল্লাহকে কোন কিছুই তো দেখানোর মতো নাই, যদি আল্লাহ রহম করে জান্নাত না দেয়। তাই আল্লাহর রহমতটাই খুঁজতেছি এ ছাড়া আল্লাহকে আর কী বলতে পারছিনা।
মুমিনের উচিত মৃত্যু আসার আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করা।
দুনিয়ার চাকচিক্যে নিজেকে হারিয়ে না ফেলা । রাসূলুল্লাহ (সা.) মুমিনদের জানাজায় অংশগ্রহণ করতে বলেছেন এবং তাতে এক কিরাত্ব তথা ওহোদ পাহাড়ের সম পরিমাণ নেকি ও দাফন শেষ করে ফিরে এলে তাতে দুই কিরাত্ব সমপরিমাণ নেকির কথা বলেছেন। (বুখারি হাদিস : ৪৭)
যাতে অন্যের জানাজা দেখে নিজের জানাজার কথা স্মরণ হয়, অন্যের জনের কবরে শোয়ানো দেখে নিজের কবরের কথা মনে পড়ে, এবং অন্যকে কবরের ভয়াবহতা স্মরণ হয়। মৃত্যুকালীন অসহায় অবস্থার কথা স্মরণ হয়, কেননা মৃত্যু যে কোনো সময় এসে যেতে পারে। তাই মুমিনের জন্য সর্বদা মৃত্যুর কথা স্মরণ করা, এতে দুনিয়ার প্রতি আসক্তি দূর হবে, এবং ইমান বৃদ্ধি পাবে।আত্মশুদ্ধিতে এবং পরকালের জন্য পাথেয় খুঁজতে সাহায্য করবে।
এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রা.) বলেছেন, ‘যখন সন্ধ্যা উপনীত হয় তখন সকালের জন্য অপেক্ষা কর না। আর সকাল উপনীত হলে সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষায় থেক না। তোমার সুস্থতা থেকে কিছু সময় তোমার অসুস্থতার জন্য বরাদ্দ রাখ এবং সময় থাকতে মৃত্যুর জন্য পাথেয় সংগ্রহ করে নাও।’ (সহিহ বুখারি : ৬৪১৬)।
সর্বদা আল্লাহ তাঁয়ালা আমাদের দুনিয়ার সব ধরনের অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার থেকে ফিরে থাকার মানসিকতা তৈরি করে দেক,মানুষের দুনিয়ার জীবন ক্ষনস্থায়ী এ কথা স্মরণ রাখার তোফিক দান করুণ।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল মুসলিম পরিবারে গুলোকে মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে মানুষের এ ক্ষনস্থায়ী জীবনের সব নেক আমল করে আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবন শান্তির করে দুনিয়া থেকে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। (আমীন..... )
- Get link
- X
- Other Apps
Popular Posts
- Get link
- X
- Other Apps
চাঁদ রাতের গুরুত্ব ও তার গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment