Skip to main content

Featured

আমাদের মুখের ব্যবহার আমাদেরকে মূর্খ বানিয়ে দেয় আবার আমাদের মুখের ব্যবহারই আমাদেরকে শিক্ষার উঁচু স্থানে এস্থানে দেয়।

মানুষের জীবনে কথা হলো সব থেকে বড় একটা প্রভাবশালী অস্ত্র ..!  ঠোট থাকলে হয় না  যদি কথাই বলতে না পারে, আর কথা বললে হয় না যদি সেই কথার না থাকে কোন মূল্য..! আমাদের ঠোঁট থেকে বলা কিছু শব্দ বা কথা কখনো কখনো এমন হয় যে মানুষকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয়, আবার সেই একই ঠোঁটের কিছু কথা কারও হৃদয়ে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নও হয়ে যায়।  আমাদের কিছু কথা এমন হয় যে মানুষকে নতুন করে ভাবার সাহস দেয় আবার সেই আমাদেরই কিছু কথা এমন হয় যে একজন আর মনের অনেক সাহস সেকেন্ডে কেড়ে নেয়।  আমাদের এই ঠোঁটের ব্যবহারিত শব্দ চোখে দেখা না গেলেও এটা অনুভব করা যায় খুব গভীর থেকে, আমাদের ঠোঁটের এই উচু নিচু শব্দের ভার আমরা নিজেরাও বইতে পারিনা, আমরা জানি না আমাদের এই ঠোঁটের কোন শব্দ টা কার হৃদয়কে ভেঙ্গে দেয় বা কোন শব্দটা কার হৃদয়কে নতুন করে বাঁচার সাহস যোগায়, ঠিক এই কারণেই আমাদেরকে কারো সাথে কথা বলার সময় খেয়াল করে কথা বলতে হবে, যেন আমাদের ঠোঁট থেকে এমন কোন আচরণ বা এমন কোন কথা বের না হয়, যে কথার কারণে একটা মানুষকে শেষ করে দিতে পারে ভিতর থেকে তার সাহসকে ধ্বংস করে দিতে পারে। ভালো কথা শুধু  কারো ...

রমজান মাসের প্রথম জুম্মা ও জুমার ফজিলত



পবিত্র রমজান এসেছে মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য, নিজের বিগত গুনাহ থেকে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য, এই সুযোগে নিজেকে আল্লাহতালার নৈকট্যে নিয়ে আসার জন্য, আমাদের মুসলমানদের উচিত নাই এই সময়টাকে হেলায় দুলাই কাটিয়ে ফেলা, ঘুরতে যাওয়া আসতেছে নানদের সাথে হাসি তামাশা করা বা ঈদের মার্কেট নিয়ে ব্যস্ত থাকা, এগুলো থেকেও আল্লাহতালার নৈকট হয়ে নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমতাওয়াই আমাদের জন্য উপকারী, মার্কেট ঘুরাফিরা এগুলা প্রত্যেক মাসে করতে পারবো কিন্তু রমজান মাস পুরা বছর আবার পাবো না, আর পুরা বছর যে সবাই বেঁচে থাকব এমনও কোন কথা না,

 দেখা যাবে এই বছর অনেকজনকে রমজানের দেখতেছেন কিন্তু সামনের বছর এর মধ্যে অনেকে ঝরে যাবে অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করবে, আমিও যে আজকে পোস্টটা লিখতেছি আমারও কোন গ্যারান্টি নাই যে আমি সামনের বছর আবার পোস্ট করতে পারবো। সময় আর সুযোগ একবার চলে গেলে আরেকবার ফিরে আসে না। যেমন আজকে একটা জুম্মার পাইছি আলহামদুলিল্লাহ, জোহরের সময় সামান্য কিছু সময়ের জন্য শুইছি কিন্তু এমন ঘুম আসছে একেবারে তিনটা বাজে ঘুম থেকে উঠেছি, এর কারনে দেখেন কতক্ষণ সময় ঘুমের মধ্যে চলে গেছে, আর স্বাভাবিক রোজা রেখে শুইলে অবশ্যই ঘুম আসবে, সেটা আমি আপনি জানি কিন্তু জানি মানে একেবারেই শুয়ে সময়টা নষ্ট করা আমার জন্য ঠিক হইনি। একটা দিন সময় পাইছি একটু তেলাওয়াত করে কাটাতে পারতাম, বাড়ি নামাজ পড়ে কাটাতে পারতাম।

** আজ রমজানের প্রথম জুম্মা ছিলো!

 জুম্মাবারে একটা বিশেষ সুযোগ হলো আল্লাহ তার বন্দাকে ক্ষমা করেন, কারণ স্রষ্টা তো জানে তার সৃষ্টি কেমন অর্থাৎ কখন কখন ভুল করতে পারে, আর কখন সে ভুল থেকে ফিরে আসতে পারে, তাই আল্লাহ তাআলা বছরে যেমন একটা মাস রমজান দিয়ে তার বন্দার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন, মাকে তো বলেছেন যে বান্দা গুনা করার পর যখনই ক্ষমা চাইবে আল্লাহ তায়ালা  তাকে ক্ষমা করে দিবে। প্রতিদিন গুনাহ করলে বান্দার উচিত প্রতিদিন ক্ষমা চাওয়া, কিন্তু বান্দা অনেক সময় সেটা বুঝবে না তাই তার জন্য সুযোগ রেখেছে সে যখন বুঝবে তখনই ক্ষমা চাওয়া,আরো সুযোগ দিয়েছেন প্রতি সপ্তাহে একটা জুম্মাবার দিয়ে,সাথে জুমার নামাজের প্রতি মায়া হওয়ার জন্য কমিয়ে দিয়েছেন নামাজ, যেনো সে নামাজ কম এই কথা চিন্তা করে হলেও  জুমা পড়তে যাই।

আর আল্লাহ তাঁয়ালা তার বান্দাকে ক্ষমা করার জন্য ও এই সময়টায় অপেক্ষা করেন, বান্দা জুমা পড়বে এবং কখন তাদের ছোট ছোট হাতগুলো উঠাবে তার স্রষ্টার  কাছে,এবং বলবে তার গুনাহের কথা, আল্লাহ তাঁয়ালার মুহাব্বতের নবীর মহব্বতের উম্মত বলে কথা।

আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ করে দিয়েছেন এবং নির্দেশ দিয়েছেন, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-

'মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।' 

(সুরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)

অর্থাৎ কাজ থেকে ফেরে নামাজ পড়তে বলেছেন,আবারো কাজে ফিরে যেতে বলেছেন। কাজ থেকে ফিরে আসা মানে আল্লাহ তাযালাকে  কিছু সময় দেওয়া বা আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে যেনো আমরা কিছু চাইতে পারি, কখনো যেনো বলতে না পারি যে সময়ের জন্য আল্লাহর কাছে চাইতে পাবিনা।

আবারো  নামাজ পরে সেই কাজের  কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে আল্লাহ তাআলা তাকে কাজে তাকে বরকত দিতে পারেন ও তাকে ক্ষমা করতে পারে।


**সুরা কাহফ তেলাওয়াতের ও একটা ফজিলত রেখেছেন জুমার দিনে।

••হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমআ থেকে অপর (পরবর্তী) জুমআ পর্যন্ত নূর হবে। সময় করে আমাদের সূরা কাহাফটা তেলাওয়াত করে নেওয়া, শুক্রবারে তাড়াতাড়ি গোসল করে ফেলা কারণ গোসল করলে আমলের প্রতি মন বসে ভালো, আর শুক্রবারে আমি ভালো জামা কাপড় পরা ও সুগন্ধি দেওয়ার,কেননা জুমার দিন তাড়াতাড়ি গোসল করা সুন্দর জামা পড়া অর্থাৎ পরিষ্কার জামা পর আর কি, সবার আগে মসজিদে যাওয়া এবং মসজিদে হেঁটে হেঁটে যাওয়া এগুলো সব জুমার দিনের সুন্নত। 

 **সূরা কাহাফ তেলাওয়াতকারীর জন্য আরও একটি বড় সুসংবাদও রয়েছে। যেমন 

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্ত থাকবে।

 বর্তমানে যে হারে অশ্লীলতা বেড়ে চলতেছে, সিগারেট খাওয়া ও শরীরে  ওড়না না দিয়ে চলাফেরা করার স্বাধীনতা খুঁজে, রাতের বেলা রাস্তায় হাঁটা, যেখানে মেয়েদের জন্য দিনের বেলায় বের হওয়া নিষেধ আর সেখানে কি করে মেয়েরা আক্ষেপ করে রাতের বেলা রাস্তায় হাঁটার জন্য, একটাই কারণ যে যখন মানুষকে অল্প কিছু স্বাধীনতা দেওয়া হয় তখন সে আরো বেশি চাই, এটাই মানুষের স্বভাব তাই যত কম এর মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করা যায় জীবন ততই সুন্দর ফেতনা বিহীন থাকা যায়, কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষিত মানুষ না তার পাগলামি নিয়ে ছুটছে, আর এই স্বাধীনতা তাদেরকে হয়তো বা দজ্জালের মুখোমুখি ও করে নিতে পারে, বলা যায়না মেয়েরা তো হতে পারে দজ্জালের আগমনের হাতিয়ার।  তাই সময় পেলে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করব এই বলে সময়কে পার না-করে সময় থেকে সময় বের করে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করতে হবে।

** অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমআ থেকে অপর জুমআ পর্যন্ত তার সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। এছাড়া এই চিন্তা করলে হবে না যে আপনার কবিরা গুনাহ মাফ হবে এগুলোর দ্বারা আপনার চগীরা গুনাহ  মাফ হবে যে,কবিরা গোনাহ তাওবা করা ছাড়া ক্ষমা হবেনা 

(কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য হচ্ছে যে, কবিরা গোনাহ তাওবা করা ছাড়া ক্ষমা হয় না।)

তবে যদি কারো খুব বেশি ব্যস্ত থাকে তাহলেও সে যেনো সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করে কেননা এ রয়েছে বিশেষ ফজিলতও বরকত।


** জুমার দিন আসরের নামাজের পরে ৮০বার দুরুদ শরীফ পডা, 


اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم                    

                            --تَسْلِيْمَا


উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা।’ 

তার ৮০ বছরের গোনাহ্ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। 

সুবহানাল্লাহ!

তাই এই ছোট ছোট আমল গুলো জীবনের সাথে সঙ্গী করে নেওয়া, দুনিয়ার ব্যস্ততার মাঝে এই জিনিসগুলোকে ফেলে না দেওয়া, দুনিয়াতে কমাস কম আমরা 60 কি 80 বছর থাকতে পারবো এর বেশি কয়েক বছর আল্লাহ হায়াত দিলে থাকতে ও পারি, যদি থাকি তখন আর দুনিয়ার মায়া থাকবেনা এমনেই উঠে যাবে তখন আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া কোনো কিছুই করার থাকবেনা, তাহলে তখন অপশন না থাকার কারণে আল্লাহ আল্লাহ করবো কিন্তু  এখন আল্লাহ আল্লাহ করাটা বেশি উত্তম ও আল্লাহর পছন্দ। যৌবনের ইবাদাত টাকেই আল্লাহতালা বেশি প্রাধান্য দেয় বৃদ্ধকালের থেকেও। তাই কিছুদিন দুনিয়ার সুখের জন্য পুরা জিন্দেগীকে নষ্ট করা কোনো ব্যক্তির জন্য  বুদ্ধিমানের কাজ না।

 মতে এখন যেহেতু রমজান আরো বেশি সুযোগ আল্লাহতালার নৈকট্যতা হাসিল করার এবং আল্লাহতালার কাছে চেয়ে নেওয়ার নিজের গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে নেওয়ার। নিজের ভবিষ্যৎটা সুন্দর হওয়ার জন্য আল্লাহতালার কাছে কেঁদে কেঁদে খুঁজে নেওয়ার। নিজের জীবনের সৎ একজন সঙ্গীর জন্য আল্লাহতালার কাছে খোঁজা। সৎ সন্তান-সন্ততির জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে খোজা। ভিক্ষুকের মত খুঁজতে থাকা। ভিক্ষুককে আমরা অনেক সময় ৫-৬ বার খুঁজলেও না দিতে পারি কিন্তু আল্লাহতালা একবার থেকে দুইবার খুঁজলে অবশ্যই দিয়ে দিবেন। কারণ তিনি আমাদের মত না তার ধন-সম্পদ যদি  সবই দিয়ে দেয় যা কিছু আমরা চাই তাও আল্লাহতালার ভান্ডার থেকে অল্প কিছুও কমবে না। দুনিয়াতে যে যা চায় সব কিছু দিয়ে দিল আল্লাহর ভান্ডার থেকে একতিল পরিমাণ সম্পদ ও কমবে না। তাই চাওয়ার ক্ষেত্রে কৃপণতা বা লজ্জা বোধ না করা সময় বের করে খোঁজা।

 •• রমজানে চাইলে আপনি কোন মুসলমানকে ইফতার করিও সওয়াব কামাই করতে পারবেন.. কালকে ইফতার করানোর মধ্যে রয়েছে ফজিলত।

রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা সমপরিমাণ সওয়াব ওই ব্যক্তিকে দান করবেন যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে সামান্য দুধ দিয়ে কিংবা খেজুর দিয়ে কিংবা পানির শরবত দিয়ে ইফতার করাবে। আর যে ব্যক্তি রমজান মাসে কোনো রোজাদারকে পেট পুরে আহার করাবে আল্লাহ তায়ালা (কিয়ামতের দিন) তাকে আমার হাউজে কাউসারের পানি পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করবেন। এ পানি পান করার পর জান্নাতে প্রবেশ করার আগে সে আর তৃষ্ণার্ত হবে না। 

(মিশকাত শরিফ)

 এমনিতে তো জুম্মাবারের বরকত রয়েছে বা ফজিলত রয়েছে এর মধ্যে রমজানের জুমা সওয়াব আরো দ্বিগুণ লাভের সুযোগ পাওয়া।


 রমজান পেয়েও আল্লাহতালার কাছ থেকে নিজের ভুলও পাপ গুলোকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হলে তার থেকে দুর্ভাগা আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহতালা আমাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ করে দেক আর প্রতিটা জুমা বারকে সুন্দরভাবে আদায় করার তৌফিক দান করুক।

আমীন।


Comments