Skip to main content

Featured

আমাদের সমাজ এখনো মেয়েদের চরিত্র বা গুণাবলির চেয়ে তার বাবার সম্পদ দিয়েই বিচার করে বেশি।

পৃথিবীতে অনেক নিয়ম  আমরা মানুষরা তৈরী করি আবার আমরাই সেই নিময়কে ভঙ্গে অন্য নিয়ম তৈরী করি।  আমাদের আসে পাশে ও আমাদের সমাজেরগুলোতে হাজার টা মিথ্যা কথা ও রসিকতা থাকতে ও এটা রসিকতাকে সব সময় সত্য মনে করতে হয় সেটা হলে মেয়েদেরকে বিয়ে দিলে বা দেওয়ার সময় যা কিছু চাই তা তা ছেলের বাড়িতে দিয়ে দেওয়া, আর যদি কোনো কারণ বা টাকা না থাকার কারণ এ দিতে না পারে সেই তখন থেকেই শুধু হয় ওই মেয়ের অশান্তি আর অবেহেলা.., ভালো কিছু করলে ও খারাপ আর খারাপ কিছু হলে তো আর কোনো কথাই নাই প্রতিনিয়ত জগড়া আর ঝাডি লেগেই থাকে। এককথায় বলাই যাই যে মেয়ের বাবা মানে হতে হবে ধনী.আমাদের পাশের একটা পরিবারের কথায় আসি তাঁদের আছে ২ছেলে একজন নিজের পছন্দ মতো বিয়ের করছেন অপরজনকে অনেক বছর পরে মা-বাবা পছন্দ করে বিয়ে করিয়েছেন, এখানে এতোটুকুই তফাৎ যে যে যাকে মা বাবা পছন্দ করে করিয়েছেন ওই মেয়ের পরিবার থেকে সবকিছুই দিয়ে দেওয়া হয়েছে আর প্রথম বউয়ের পরিবার থেকে যেহেতু তেমন কিছু দেওয়া হয়নি তাই বড় বউয়ের কোন কদর নেই, আজ ছোট বউ অনেক ভালো..  এমন হাজারো মেয়ে আছে যাদের পরিবার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সময় অনেক কিছু দিয়ে দিতে না পা...

সালামের প্রচলন।



প্রত্যেকটা ফ্যামিলিতে সব কিছুর উপরে প্রাধান্য দেওয়া হয় তাদের ছোট বাচ্চাদেরকে, কারণ প্রত্যেকটা মা-বাবাই বেঁচে থাকে তার সন্তানের মধ্যে, অর্থাৎ সন্তানের আচার ব্যবহার চলাফেরা এগুলা দিয়েই মানুষ তার মা-বাব কেমন সেটাকে বিবেচনা করে।
 সেই হিসেবে হঠাৎ করে যখন কারো বাসায় যাওয়া হয়, প্রথমেই দরজাটা নক করার সাথে সাথে যেই দরজাটা খুলুক না কেন সে যদি প্রথমে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে তার দেখাদেখি ঘরের অন্যরাও এই কাজটা করে, সে ছোট হোক কিংবা বড় হোক।
 কিন্তু বর্তমানে অনেক ফ্যামিলিতেই সালামের প্রচলনটা খুব কম, মানুষ ও এস্থান  বুঝে সালাম দেওয়া হয়। কিংবা সারাদিন দরজা খোলা রাখা হয় যার যখন ইচ্ছা তখনই ঘরে প্রবেশ করে, এক্ষেত্রে তারা সালাম দেয় না, বা একা ঢুকলেও যে সালাম দিতে হয় সে জিনিসটা মানে না।
 আসলে সালামের ও কিছু নিয়ম আছে :--
 মনে করেন কেউ একজন বাহির থেকে ঘরে প্রবেশ করলো তাহলে তার করনীয় হল বাহির থেকে যে প্রবেশ করবে সেই সালাম দিয়ে প্রবেশ করবে।
 আবার যে ঘর থেকে বের হবে সেই সালাম দিয়ে বের হবে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বের হওয়ার সময় বা ঘরে ঢোকার সময় সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রে বিপরীত জন্য আগে দিয়ে দিতে পারে তবে এক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই  যে কোন একজনে সালাম দিলেও হয়ে যাবে। কিন্তু মূল কথা হলো সালামটা দেওয়ার।
 যেখানে নবীজি কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একসাথে হাটতে গিয়ে ও মাঝখানে একটা গাছ পড়ার কারণে  হাঁটতে গিয়ে একটু দূরত্ব হওয়ার কারণে আবারো সালাম দিয়ে একত্রিত হয়ে হেঁটেছিল.! আর সে জায়গায় আমরা কিভাবে এত দূর থেকে একজন অপরজনার বাসায় গিয়েও সালাম না দিয়ে প্রবেশ করি।
 হাদিসে আছে না আসসালামু কবালার কালাম।
 আগে সালাম তারপরে কথা, হুট করে গিয়েই কেমন আছেন.! এটা জিজ্ঞাসা করা না, আগে গিয়ে সালাম দিতে হবে এরপরে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে হবে। 
ওপর দিকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমরা মানুষকে খাওয়াবে আর চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম দেবে।’ 
সালাম দেয়া নবির সুন্নাত ও নির্দেশ। 
আর সালামে বাধা দেয়া শয়তানের কাজ। কারণ শয়তান কখনো চাই আপনি নিজের কাজ করেন দুনিয়ায় থাকা অবস্থায়,শয়তান সবসময়ই চাই মানুষ সালামের উপকারিতা থেকে বঞ্চিত থাকোক..,
 ••• সালাম-এর বিশেষ কিছু উপকার রয়েছে যেমন :-
সালাম হলো মূলত এক মুসলমান অপর মুসলমান ভাইয়ের জন্য দোয়া করা।
আর সেটা আমরা সালামের অর্থের দিকে খেয়াল করলেই খুব সহজে বুঝতে পারবো যেমন 
 সালামে  এ আমার বলে থাকি -- السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ অর্থাৎ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এটি একটি দোয়া। 
আর সালামের উত্তরে বলে থাকি-- وَعَلَيْكُمُ السَّلاَم অর্থাৎ আপনারও উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এটিও একটি দোয়া। 
সালামকারী যেভাবে দোয়া করে, সালামের উত্তরদানকারীও সালাম প্রদানকারীর জন্য দোয়া করে। এভাবে মুসলমানরা একে অপরকে সালাম দেওয়ার মাধ্যমে দোয়া করে থাকি।

•• সালামের মাধ্যমে পরিবারের মধ্যে বরকত লাভ হয়।
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেন, ‘হে বৎস! তুমি যখন তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে যাবে, তখন সালাম দেবে। তাতে তোমার ও তোমার পরিবার-পরিজনের কল্যাণ হবে।’ (তিরমিজি)
 আর শয়তান কখনোই চাইবে না যে আপনার পরিবার আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কল্যাণ পাক এবং ভালোভাবে চলাফেরা করুক।

হাদিস এ আছে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  নিজ পরিবার-পরিজনকে সালাম দেয়ার কথা বলেছেন। স্বামী তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা, মা, ভাই, বোনকে সালাম দেবে। আবার স্ত্রীও পরিবেরর বাবা-মা, ভাই-বোন, ছোট-বড় যেই থাকুক না কেন; তাদের সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। আল্লাহ তাআলা ওই বাড়িকে ওই ব্যক্তিকে হেফাজত করেন।’ (আদাবুল মুফরাদ)
নিজের পরিবার ও ঘরকে হেফাজত রাখতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে সালাম এর প্রচলন চালু রাখতে হবে।
••  সালাম দিলে সাওয়াব হয়পরস্পর সাক্ষাতে সালাম বিনিময়ে রয়েছে অনেক সাওয়াব।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে আছে,
হজরত ইমরান ইবনু হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। তখন তিনি বললেন, লোকটির জন্য ১০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (একটু বাড়িয়ে) বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ‘। তখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তার জন্য ২০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (আরও একটি শব্দ বাড়িয়ে) বললেন- ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তার (সালামের) উত্তর দিয়ে বললেন, লোকটির জন্য ৩০টি নেকি লেখা হয়েছে।’
(সুনানে তিরমিজি-২৬৯০) ইমাম তিরমিজি রহ. এই হাদীসের মান ‹হাসান› বলেছেন।
এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সালাম দেওয়া ও সালাম এর উত্তর দেওয়ার মাঝে ও কতো গুলো নেকী নিহিত রয়েছে।

••• সালামে দেওয়ার দ্বারা ভালোবাসা ও মুহাব্বাত বৃদ্ধি পায়।
এক হাদীসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, “তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে যেতে পারবেনা যতক্ষণ না তোমরা মুমিন হবে। আর মুমিন ততক্ষণ পর্যন্ত হতে পারবেনা যতক্ষণ না একে অপরকে মুহাব্বাত করবে। আমি কি তোমাদের এমন একটি আমলের কথা বলে দিব না ! যা করলে তোমাদের পরস্পরের মাঝে ভালবাসা সৃষ্টি হবে? (তা হলো) তোমরা তোমাদের পরপস্পরের মাঝে ব্যাপকভাবে সালামের প্রচার প্রসার কর।›
(মুসলিম : ১/৫৪ হাঃ ৫৪।তিরমিযি : ২/৭ হাঃ ২৬৮৯) 
এর দ্বারা বুঝা যাই সালাম দিলে অবশ্যই আমাদের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্বি পাবে,
সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রে ছোট থেকে বড় সকলকে দেওয়ার চেষ্টা করা, রিক্সা থেকে নামার সময় সেই চালককেও সালাম দেওয়ার চেষ্টা করা, কারণ আমরা অনেকেই রিক্সাওয়ালা আঙ্কেলদেরকে ছোট মনে করি বা কিছুই মনে করি না তারাও যে সালাম পাওয়ার যোগ্য সেটাই আমরা মনে রাখি না।
 দোকান থেকে বা কোন মার্কেট থেকে বাজার শেষ হওয়ার পরে বা দোকানে ঢোকার আগে তাদের কে সালাম দেওয়া এবং বের হওয়ার সময় ও তাদেরকে সালাম দিয়েই বের হওয়া।
••• সালাম দিলে এই সালাম এর মাধ্যমে নিজেদের অহংকার দেমাগ দূর হয়।
যে প্রথমে সালাম দিলো সে যেনো অহংকার মুক্ত থাকলো। ইমাম বায়হাকী (রহ.) তার নিজ গ্রন্থ ‘শুআবুল-ঈমানে একটি হাদিস বর্ণনা করেন।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত যে,আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের যে প্রথমে সালাম দিবে, সে যেনো অহংকার থেকে মুক্ত থাকলো।
(মেশকাত: ৪৬৬৬। শুআবুল ইমান: ৮৭৮৫)

 এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল করলে দেখা যায় যে সালাম দেওয়ার মধ্যে অনেকগুলো উপকার রয়েছে, যেগুলো আমরা চাইলেই আদায় করতে পারি আর এই আমল গুলোর মাধ্যমে, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস এর সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরতে পারবো।
 এভাবেই যদি আমরা সালামের প্রচলনটা রাখতে পারি তাহলে আমাদের দ্বারা যেমন লাভবান হবে পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজন।

তাই আমাদের সকলকে আল্লাহ তাআলা  সালামের গুরুত্ব বোঝার তাওফিক দান করুন এবং সালামের মাধ্যমে বরকত লাভ, হেফাজত করুণ আমাদের সকালকে।
 আমিন...!



Comments