Skip to main content

Featured

আমাদের মুখের ব্যবহার আমাদেরকে মূর্খ বানিয়ে দেয় আবার আমাদের মুখের ব্যবহারই আমাদেরকে শিক্ষার উঁচু স্থানে এস্থানে দেয়।

মানুষের জীবনে কথা হলো সব থেকে বড় একটা প্রভাবশালী অস্ত্র ..!  ঠোট থাকলে হয় না  যদি কথাই বলতে না পারে, আর কথা বললে হয় না যদি সেই কথার না থাকে কোন মূল্য..! আমাদের ঠোঁট থেকে বলা কিছু শব্দ বা কথা কখনো কখনো এমন হয় যে মানুষকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয়, আবার সেই একই ঠোঁটের কিছু কথা কারও হৃদয়ে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নও হয়ে যায়।  আমাদের কিছু কথা এমন হয় যে মানুষকে নতুন করে ভাবার সাহস দেয় আবার সেই আমাদেরই কিছু কথা এমন হয় যে একজন আর মনের অনেক সাহস সেকেন্ডে কেড়ে নেয়।  আমাদের এই ঠোঁটের ব্যবহারিত শব্দ চোখে দেখা না গেলেও এটা অনুভব করা যায় খুব গভীর থেকে, আমাদের ঠোঁটের এই উচু নিচু শব্দের ভার আমরা নিজেরাও বইতে পারিনা, আমরা জানি না আমাদের এই ঠোঁটের কোন শব্দ টা কার হৃদয়কে ভেঙ্গে দেয় বা কোন শব্দটা কার হৃদয়কে নতুন করে বাঁচার সাহস যোগায়, ঠিক এই কারণেই আমাদেরকে কারো সাথে কথা বলার সময় খেয়াল করে কথা বলতে হবে, যেন আমাদের ঠোঁট থেকে এমন কোন আচরণ বা এমন কোন কথা বের না হয়, যে কথার কারণে একটা মানুষকে শেষ করে দিতে পারে ভিতর থেকে তার সাহসকে ধ্বংস করে দিতে পারে। ভালো কথা শুধু  কারো ...

প্রত্যেকটা নারী কি পাচ্ছে তার প্রাপ্ত সম্মানটুকু..?



আমরা মুখে বলি নারীরা অবহেলিত না তবে কাজের ক্ষেত্রে সেই আমরাই প্রকাশ করি  নারী আজও অবেহেলিত।

মহান আল্লাহর নিকট ইসলামই একমাত্র মনোনীত দ্বীন (আলে ইমরান ১৯)। 

আর এই দ্বীনে মহান আল্লাহ নারীর মর্যাদাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন।

 নর-নারীর সমন্বয়েই মানব জাতি। নারী জাতি হ’ল মহান আল্লাহর এক বিশেষ নে‘মত।

 আল্লাহ তা‘আলা নারীকে পুরুষের জীবন সঙ্গিনী হিসাবে মানব জীবন পরিচালনা করার জন্য একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।

 ইসলাম মর্যাদার দিক দিয়ে নারীকে পুরুষের থেকে ভিন্ন করে দেখেনি। বরং ইসলামের আগমনেই নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত নারীরা সমাজে পেয়েছে মুক্তির সন্ধান। 

সারা দুনিয়াতে যখন নারীদের 

নিদারুণ অবস্থা ছিলো, তখন ইসলাম নারীর যথাযথ অধিকার ও মর্যাদা প্রদান করেছিলো,নারীদেরকে দিয়েছিলো সম্মানের সুউচ্চ আসন। 

যেমন আল্লাহ তা‘আলা পুরুষদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ 

‘তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক’          

               (বাক্বারাহ ১৮৭)। 

তিনি আরো বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِيْ خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيْراً وَنِسَاءَ وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِيْ تَسَاءَلُوْنَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيْباً-

‘হে মানব সকল! তোমরা তোমাদের স্বীয় প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একই আত্মা (আদম) হ’তে সৃষ্টি করেছেন এবং ঐ আত্মা হ’তে তাঁর জোড়া (হাওয়া)-কে সৃষ্টি করেছেন এবং এতদুভয় হ’তে বহু নর ও নারী বিস্তার করেছেন। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা পরস্পরের নিকট (স্বীয় হকের) দাবী করে থাক এবং আত্মীয়তা (এর হক বিনষ্ট করা) হ’তেও ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সকলের খবর রাখেন’ (নিসা ১)।

আজও নারী হচ্ছে নির্যাতিত এত কিছুর পরও।

 গত দুদিন আগে পরে ২টা ফেসবুকে নিউজ দেখে খুব বিস্মিত হলাম এবং খুবই আশ্চর্য হলাম এখনো নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার স্বামীর কাছে, জীবনের শেষ মুহূর্তে এসেও জুলুমের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করছে স্বামীর হাতে।

 গ্রাম গঞ্জে হাজার নারী এখনো স্বামীর হাতের পুতুল হয়ে দিন পার করছে, অনেক নারীর জীবনের কোন শখ বা ইচ্ছা কিছুই নেই, বাবার বাড়িতে অল্প কিছু সুখ-শান্তি বা উদাসীনতায় দিন পার করতে পারলেও স্বামীর ঘরে গিয়ে একেবারে হয়ে পড়ছে বন্দী।

হ্যা ইসলাম বলেছেন মেয়েদেরকে ঘরবন্দী থাকতে কিন্তু এমন ঘর বন্দী না যে তার ইচ্ছা বলতে কিছুই থাকবে না সে পরিবারে সকলের জন্য সবকিছু করবে কিন্তু তার ব্যক্তিগত কিছুই থাকবে না.., ইসলাম যেমন নারীকে পর্দার আদেশ দিয়েছেন তেমনি আবার ছেলেদেরকেও নির্দেশ দিয়েছেন যে স্ত্রীদের উপর সদয় হতে..! স্ত্রীদের উপরে জুলুম না করতে..!

 স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার সবথেকে নিচু মন-মানসিকতার কাজ, এবং যে সমস্ত স্বামী তার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে এরা সব থেকে নিম্ন ও জঘন্য ব্যক্তি।

আবদুল্লাহ ইবনে জামআ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যেন নিজের স্ত্রীকে গোলামের মতো মারধর না করে। অথচ সেই স্ত্রীর সঙ্গেই দিনের শেষভাগে শয্যা গ্রহণ করবে।

(বুখারি, হাদিস : ৫২০৪ )

 স্ত্রী যদি বেশি অবাধ্য হয়  তাহলে তাকে শাসন করার ও পদ্ধতি ও ইসলাম ঠিক করে দিছেন 

তাহলে :---

•• স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে নিরসনকল্পে প্রথম পর্যায়ে ইসলামের নির্দেশনা হলো—স্ত্রীর কোনো বিষয় স্বামীর কাছে খারাপ লাগলে দেখতে হবে ভালো লাগার মতো অন্য কোনো গুণ তার মধ্যে আছে কি না? এর পরও যদি স্বামী মনে করে যে স্ত্রীর মধ্যে বাস্তবেই এমন কিছু দোষ আছে, যেগুলো সহ্য করার মতো নয়, বরং সংশোধন করা অপরিহার্য, তখন স্বামীর অধিকার আছে স্ত্রীকে সংশোধন করার।

পবিত্র কোরআনে সংশোধনের পদ্ধতির কথা তুলে ধরা হয়েছে এভাবে—‘স্ত্রীদের মধ্যে যারা অবাধ্য হবে বলে আশঙ্কা করো, তাদের সদোপদেশ দাও। (সংশোধন না হলে) তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো। (এর পরও সংশোধন না হলে) তাদের মৃদু প্রহার করো।’

               (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩২)

অর্থাৎ কোনো স্ত্রীকে অবাধ্য হতে দেখলে প্রথমে তাকে নরমভাবে মার্জিত ভাষায় ভালোবাসা ও দরদপূর্ণ কথা দিয়ে বোঝাবে। এটা সংশোধনের প্রথম পর্যায়।

এতেই যদি বোধোদয় হয়, তবে বিষয়টি এখানেই মিটে গেল। পক্ষান্তরে যদি ওয়াজ-নসিহত ও বুঝিয়ে-শুনিয়ে কাজ না হয়, তখন সংশোধনের দ্বিতীয় টি চেষ্টা করতে হবে।

 •• দ্বিতীয় পর্যায়ে স্ত্রীকে সতর্ক করার জন্য নিজে পৃথক বিছানায় শোবে। স্ত্রীর যদি বিবেক থাকে, তাহলে এতে তার টনক নড়বে এবং বিবাদটাও এখানেই শেষ হয়ে যাবে। তবে একেবারে কথার্বাতা ও সালাম-কালাম বন্ধ করা যাবে না। এমন আলাদা হওয়া জায়েজ নয়।

 (ইসলাহি খুতুবাত : ২/ ২১৬-২১৭)

স্ত্রীকে শোধরাবার ভদ্রোচিত দ্বিতীয় পন্থা যদি কাজে না আসে, তাহলে সর্বশেষ তৃতীয় পন্থা অবলম্বন করতে হবে। 

•• তৃতীয় হল, তাকে মারধর করা। কিন্তু এই মারধর কী ধরনের হবে?

 কতটুকু মারধর করা যাবে? এ সম্পর্কে বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, (প্রয়োজন হলে) নারীদের এমনভাবে মারবে, যেন শরীরে মারধরের চিহ্ন কিংবা জখম সৃষ্টি না হয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৮৫১)

অন্য কোনো উপায়ে যদি তাকে শোধরানো সম্ভব না হয়, তখন একেবারে শেষ আশ্রয় হিসেবে মারধরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেও আবার বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মারের উদ্দেশ্য হবে তাকে সংশোধন করা, তাকে কষ্ট দেওয়া উদ্দেশ্য হতে পারবে না। তাই এমন বেশি মারধর করা উচিত হবে না—যাতে শরীরে দাগ বসে পড়ে।

 আর বর্তমানে তো শুধু দাগ না একেবারে মেরেই ফেলতেছে 

যেখানে স্ত্রীদের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আচরণ এমন ছিলো যে 

রাসুলুল্লাহ (সা.) সারা জীবনে একবারের জন্যও কোনো স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেননি, বরং ঘরে প্রবেশকালে তাঁর পবিত্র চেহারায় মুচকি হাসির স্নিগ্ধতা লেগেই থাকত।

এর থেকে বোঝা গেল হাসিমুখে ঘরে প্রবেশ করা সুন্নত।

 রুদ্রমূর্তি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা সুন্নত নয়, বরং তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শপরিপন্থী।


*** মর্যাদার দিক থেকে আপনি নারীকে যেভাবেই রাখবেন আপনি সংসারে ও তার তেমন প্রতিচ্ছবি  দেখবেন।

মর্যাদা অর্থ- গৌরব, সম্ভ্রম, সম্মান, মূল্য ইত্যাদি। আর নারীর মর্যাদা বলতে নারীর ন্যায়-সঙ্গত অধিকারকে বুঝানো হয়, কোন পরিবার কখনো নারী ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না, ঘরের সৌন্দর্য একজন নারীর মধ্যেই থাকে।

 দুনিয়াতে একজন নারী চাইলে তার পরিবার এবং তার সংসারকে জান্নাত এর মত সুখী করে রাখতে পারে, আবার সেই নারী যদি চায় তার সংসারকে নরক বানিয়ে ফেলতে পারে।

 আর নারীরা তখনই তাদের সংসারকে সুন্দর ও পরিপাটি করে রাখে, যখন সে তার পরিবারে তার যথেষ্ট পরিমাণ মূল্যায়ন ও সম্মানটুকু পাই।

 আর নারীর অধিকা অর্থ প্রাপ্য, পাওনা নারী হিসেবে তার যতটুকু সম্মান ততটুকুই তাকে পরিপুর্ণ দেওয়া ইত্যাদি।

আর এ প্রাপ্য বা পাওনা বলতে তার অধিকারের স্বীকৃতি, কর্তব্যের সঠিক বিশ্লেষণ ও সামাজিক জীবনে তার অবদানের যথার্থ মূল্যায়ন করাকেই বুঝানো হয়। 

সুতরাং একজন নারী তার পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তথা সকল ক্ষেত্রে নারীর যথার্থ মূল্যায়ন হওয়াতেই থাকে নারীর সম্মান।

অতএব যদি কোথায় ও কোনো নারীর ন্যায্য অধিকার স্বীকার না করা হয়, অথবা তার কর্তব্যে বাধা দান বা তার সামর্থ্যের বাহিরে তার উপরে কোন দায়িত্ব-বা কর্তব্য  চাপিয়ে দেওয়া হয়, কিংবা তার অবদান সমূহের সঠিক মূল্যায়ন না করা হয়, তাহ’লে তার অধিকার ও মর্যাদা খর্ব করা হয়েছে বলেই মনে করা হবে এবং তার প্রতি অবিচার করা হবে। 

আর যদি কেউ কোনো নারীর  অধিকার সমূহ স্বীকার করে, এবং তার সমস্ত চেষ্টাকে সম্মান জানাই,তার সামর্থ্য অনুসারে তাকে দায়িত্ব-কর্তব্য আদায় করার পূর্ণ সুযোগ দেয় এবং সামাজিক জীবনে তার অবদান সমূহের মূল্যায়ন করে, তখন ও নারীর উপযুক্ত মর্যাদা দান করেছে বলে মনে করা হবে।


** ইসলাম আসার পূর্ব যুগে নারীদের অবস্থান  যেমন ছিলো ও নারীদের বেপারে তাঁদের চিন্তা সমূহ :--

ইসলাম আসার আগে পূর্ব যুগে নারী ছিল সবচেয়ে অবহেলিত, লাঞ্চিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং অধিকার হারা এক নিম্নজাতি ছিলো।

সে সময় নারীদেরকে ভোগ-বিলাসের কোনো পণ্য ভাবা হতো এবং সে সময় নারীদের সাথে এমনই আচরণ করা হতো

তখন নারীদেরকে মানুষ হিসাবে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়া হ’ত না এবং নারীদের কোন সামাজিক অধিকার ছিলো আর পুরুষেরা সেটা  স্বীকৃতও দিতোনা। এমনকি মানব জাতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে সমাজে বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও ছিলনা নারীদের। 

 নারীদের প্রতি খুবই কঠোর আচরণ করা হতো । বাড়ির পোষা প্রাণীদের সাথে যে রূপ ব্যবহার করা হতো তার থেকেও খারাপ ব্যবহার করা হতো সে সময় নারীদের সাথে, তখনকার সময় নারীদেরকে মনে করা হতো দাসী। 

তখন তো নারীদের ক্রয়-বিক্রয় ও করা হতো, আর নারীরা ছিলো পুরুষদের ভোগেরবস্ত্র স্বামী যত ইচ্ছা খুশি মতো স্ত্রী ভোগ করতো আবার যখন  ইচ্ছা হতো ঐ স্ত্রীকে অপরের কাছে বিক্রি করে দিতো আবার অনেকে তাঁদের  স্ত্রীকে  ঋণ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ও ব্যবহার করতো। আবার কেউ অন্যকে উপহার হিসাবে নারী গিফট করতো। এইভাবে নারীরা ছিলো পুরুষের হাতের খেলনা।

সে যুগে নারীরা পিতা-মাতা বা স্বামীর মৃত্যুর পর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত হতো অসহায় নারী জাতি। 

পিতৃহীনা সুন্দরী-ধনবতী নারীর অভিভাবক যথাযথ মোহর দানে তাকে বিবাহ করতে সম্মত হতোনা। আবার অন্যত্র বিবাহ দিতেও অসম্মতি প্রকাশ করত। 

সুন্দরী বাঁদী দ্বারা দেহ ব্যবসা করিয়ে অর্থ উপার্জন করা হতো । 

 তাদের এই জুলুম ও অন্যায় কে নিঃশেষ করাও নারীদেরকে তাদের সম্মান দেওয়ার এবং এই নিকৃষ্ট কাজ হতে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করেন:--

 وَلاَ تُكْرِهُوْا فَتَيَاتِكُمْ عَلَى الْبِغَاءِ إِنْ أَرَدْنَ تَحَصُّناً لِّتَبْتَغُوْا عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا، 

‘আর তোমরা দুনিয়ার ধন-সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যে তোমাদের যুবতী দাসীদেরকে ব্যভিচারে লিপ্ত হ’তে বাধ্য করবে না। যখন তারা পাপমুক্ত থাকতে চায়’ (নূর ৩৩)। 

তখনকার যুগে একের অধিক নারী বিবাহ করে পুরুষ তাদেকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতো আবার স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে অন্যত্র স্বামী গ্রহণের অবকাশও দেওয়া হতো না। এ জাতীয় অমানবিক ও অমানুষিক যুলুম অত্যাচারও নারীদদের সাথে করা হতো।

তারা আবার নিজের কন্যা সন্তানের জন্মকেও লজ্জাজনক মনে করে সে নিষ্পাপ  কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়ে দিতো, তাঁদের এতটুকু ও বুক কাঁপতো না বাবা বা ভাই হয়ে ও।

  এমন বিবেক বর্জিত কর্ম সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, وَإِذَا الْمَوْؤُوْدَةُ سُئِلَتْ، بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ، ‘আর যখন জীবন্ত সমাধিস্থ কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল’?

 গত পরশু যে ঘটনাটা ঘটেছিল এত আধুনিকতার যুগে এসেও এক নারীকে তার স্বামী ঘর থেকে টেনে হিচড়ে একটা জীবিত মানুষকে গর্ত করে তার গায়ে কোদাল দিয়ে মাটি ছিটিয়ে দিচ্ছে আর তার চিৎকারে তার গায়ে আঘাত করা হচ্ছে মানে এমন একটা অবস্থা যে, সে তার ওয়াইফকে মেরে ফেলবে কিন্তু কেউ কিছু বলার অধিকার রাখতে পারবে না এমনকি সে নিজেও তার জীবন বাঁচানোর জন্য চিৎকার করতে পারবে না। আর আশেপাশের মানুষ তো নিরব দর্শক, তারা ছবি তুলতে পারে পোস্ট করতে পারে কিন্তু কাউকে বাঁচানোর অধিকার বা ক্ষমতা রাখে না, অন্যায় দেখতে পারেন অন্যায় সহ্য করতে পারে কিন্তু তারা এটাই ভুলে গেছে যে অপরাধ যে করতেছে সে যেমন দোষী এমনি যারা অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে তারাও সমান দোষী, হয় দুনিয়াতে তারা ছাড় পাবেন কিন্তু আখেরাতে তাদের এই নীরবতার জবাব দিতে হবে যদি কারো উপর অন্যায় দেখেও চুপ থাকে..!

মহান আল্লাহ এ বিশ্ব জগতে অসংখ্য মাখলূকাতের মধ্যে মানব জাতিকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে মর্যাদা দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِيْ آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُمْ مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيْلاً-

‘আর আমি বনী আদমকে সম্মানিত করেছি এবং তাদেরকে জলে ও স্থলে আরোহণ করিয়েছি এবং উত্তম বস্ত্তসমূহ প্রদান করেছি। আর আমি তাদেরকে আমার বহু সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’ (বনী ইসরাঈল ৭০)।

 যেখানে মানবজাতি সবার উপরে তাহলে তো তাদের আচার ব্যবহার এমন পশুর মত হওয়ার কথা না, তারা মানুষ তাদের মর্যাদা তারা ভুলে যাচ্ছে।

 আগেকার যুগে নারীদের সাথে যেমন আচরণ করা হতো বর্তমানেও কিছু কিছু নারীর সাথে এমন আচরণ গুলোই হচ্ছে, হয় কিছু ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি আর কিছু অন্যায় আমাদের চোখের আড়াল হয়ে যাচ্ছে, দিনশেষে কিন্তু নির্যাতিত হচ্ছে নারীরা আজও।

** তখনকার সময় বিভিন্ন  ধর্মে নারীদের যেমন অবস্থানও ছিলো ও পুরুষদের যেমন চিন্তাভাবনা ছিলো:--

•• হিন্দু ধর্মে : নারীদেরকে বলী দেওয়া হ’ত এবং এ ধর্মে সতীদাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। এছাড়াও এ ধর্মে নারীরা পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত। হিন্দু ধর্মে নারীদের অতীব হীন ও নীচু স্তরের প্রাণী মনে করা হ’ত। এ দিকে ইঙ্গিত করেই Professor India গ্রন্থে বলা হয়েছে, There is no creature more sinful than woman. Woman is burning fire. She is the sharpedge of the razor she is verily all there in a body. অর্থাৎ ‘নারীর ন্যায় এত পাপ-পঙ্কিলতাময় প্রাণী জগতে আর নেই। নারী প্রজ্জ্বলিত অগ্নি স্বরূপ। সে ক্ষুরের ধারালো দিক। এই সমস্তই তার দেহে সন্নিবিষ্ট’।[1] নারীদের প্রতি ঘৃণাভরে বলা হয়েছে, Men should not love their অর্থাৎ ‘নারীদেরকে ভালবাসা পুরুষদের উচিৎ নয়’।

•• চীন সভ্যতায় : চীন দেশের নারীদের অবস্থার বিবরণ দিতে গিয়ে জনৈকা চীনা নারী বলেন, ‘মানব সমাজে নারীদের স্থান সর্বনিম্নে। অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস! নারী সর্বাপেক্ষা হতভাগ্য প্রাণী। জগতে নারীর মত নিকৃষ্ট আর কিছু নেই’।

••গ্রীক সভ্যতায় : বিশ্বখ্যাত গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস বলেন,

 'Woman is the greates source of chaose and disruption in the world'

 ‘নারী জগতে বিশৃংখল ও ভাঙ্গনের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস’।

•• বৌদ্ধ ধর্মে : বৌদ্ধ ধর্মে নারীকে সকল পাপের জন্য দায়ী করা হ’ত। এ সম্পর্কে ঐতিহাসিক ওয়েষ্টমার্ক বলেন, 

Woman are of all the snares which the tempter has spead for man, the most dangerous; in woman are embodied all the powers of infatuation which blined the mind of the world. অর্থাৎ ‘মানুষের জন্য প্রলোভনের যতগুলি ফাঁদ বিস্তার করে রেখেছে, তন্মধ্যে নারীই সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক। নারীর মধ্যে সকল মোহিনী শক্তি অঙ্গীভূত হয়ে আছে, যা সমস্ত বিশ্বের মনকে অন্ধ করে দেয়’।

•• ইহুদী ধর্মে : এ ধর্মে নারীর প্রকৃতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সতী নারীর চেয়ে পাপিষ্ট পুরুষও শতগুণে ভাল’।তারা নারীকে যাবতীয় পাপ ও মন্দের মূল কারণ হিসাবে গণ্য করেছে।

•• খৃষ্টান ধর্মে : খৃষ্টধর্ম মতে নারীরাই নরকের প্রবেশ দ্বার। সপ্তদশ শতাব্দীতে ‘কাউন্সিল অব দ্যা ওয়াইজ’-এর অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় 'Woman has no soul' ‘নারীর কোন আত্মা নেই’।

•• রোম সভ্যতায় : রোম সভ্যতায় পরিবারের নেতা ও পরিচালক পিতা বা স্বামী নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের উপর নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী ছিল। তারা যখন ইচ্ছে তখনই নারীকে ঘর থেকে বহিষ্কার করে দিত।

  পরিশেষে একাটাই কথা নারীদের প্রতি এত অন্যায় এত অবিচার এর শেষে ইসলাম ধর্ম আসার পরে সকলকে যাকে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে সে অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে সে সম্মান টুকু প্রত্যেকেই প্রাপ্য।

 নারী বলে কখনো তাকে অবহেলা করো না, নারী হলো মায়ের জাতি সে সব সময় হয় স্নেহ মাই..! আর পুরুষ সে তো জন্মাই দায়িত্ব নিয়ে..! আর দায়িত্ব কখনো পরিপূর্ণতা পায় না যদি না সেখানে স্নেহ থাকে..!










Comments