Featured
- Get link
- X
- Other Apps
আমাদের মুখের ব্যবহার আমাদেরকে মূর্খ বানিয়ে দেয় আবার আমাদের মুখের ব্যবহারই আমাদেরকে শিক্ষার উঁচু স্থানে এস্থানে দেয়।
মানুষের জীবনে কথা হলো সব থেকে বড় একটা প্রভাবশালী অস্ত্র ..!
ঠোট থাকলে হয় না যদি কথাই বলতে না পারে, আর কথা বললে হয় না যদি সেই কথার না থাকে কোন মূল্য..!
আমাদের ঠোঁট থেকে বলা কিছু শব্দ বা কথা কখনো কখনো এমন হয় যে মানুষকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয়, আবার সেই একই ঠোঁটের কিছু কথা কারও হৃদয়ে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নও হয়ে যায়।
আমাদের কিছু কথা এমন হয় যে মানুষকে নতুন করে ভাবার সাহস দেয় আবার সেই আমাদেরই কিছু কথা এমন হয় যে একজন আর মনের অনেক সাহস সেকেন্ডে কেড়ে নেয়।
আমাদের এই ঠোঁটের ব্যবহারিত শব্দ চোখে দেখা না গেলেও এটা অনুভব করা যায় খুব গভীর থেকে, আমাদের ঠোঁটের এই উচু নিচু শব্দের ভার আমরা নিজেরাও বইতে পারিনা, আমরা জানি না আমাদের এই ঠোঁটের কোন শব্দ টা কার হৃদয়কে ভেঙ্গে দেয় বা কোন শব্দটা কার হৃদয়কে নতুন করে বাঁচার সাহস যোগায়, ঠিক এই কারণেই আমাদেরকে কারো সাথে কথা বলার সময় খেয়াল করে কথা বলতে হবে, যেন আমাদের ঠোঁট থেকে এমন কোন আচরণ বা এমন কোন কথা বের না হয়, যে কথার কারণে একটা মানুষকে শেষ করে দিতে পারে ভিতর থেকে তার সাহসকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
ভালো কথা শুধু কারো সৌন্দর্য বা তার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে না, আপনার ভালো কথা হয়ে উঠতে পারে কারো জীবন চলার অনুপ্রেরণা বা আদর্শ।
মানুষকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যে মহান নিয়ামতগুলো দুনিয়াতে দিয়েছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো বাকশক্তি যা আমারা ঠোঁটের মাধ্যমে ব্যবহার করে থাকি ভালো এবং খারাপ কথা উচ্চারণের মাধ্যমে।
আমরা আমাদের ভালো ও খারাপ চিন্তা,চেতনা অনুভূতি, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা যা কিছুই হোক না কেনো আমার মনের সকল ভালো খারাপ যা কিছুই আছে সব কিছু প্রকাশ করি কথা ঠোঁটের কথার মাধ্যমে।
তাই ইসলামে আমাদের কথার ব্যবহার নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।”
(বুখারি ও মুসলিম)
অর্থাৎ, যদি আমরা আমাদের এই ঠোঁট দিয়ে কারোকে ভালো কথা বা ভালো পরামর্শ দেওয়ার মতো জ্ঞান বা বুদ্ধি না থাকে তাহলে যেনো আমরা চুপ থাকি এই চুপ থাকাটাই আমাদের জন্য উত্তম।
ভালো কথার প্রভাবে যেমন মানুষ শান্তি পাই, তেমন খারাপ কথা প্রভাব এ ও মানুষ কষ্ট পাই।
একটি সুন্দর ও কোমল বাক্য মানুষের অন্তরকে প্রশান্তিময় ও প্রফুল্ল করে দেয়, তেমনি একটি খারাপ ও তুচ্ছ করা শব্দ মানুষের অন্তরকে ধনুকের আঘাত বা গুলি করে বিধ্বস্ত করার মত ক্ষত করে দেয় ।
কেউ বিপদে পড়ে আপনার কাছে সাহায্য চাইতে এসেছে তখন যদি আপনি তাকে সাহায্য করার বিপরীতে তার খারাপ দিকগুলো তুলে ধরেন তখন তার অবশ্যই খুব খারাপ লাগবে কারণ আঘাতের জায়গায় আঘাত পড়লে তখন আঘাতের তিক্ততা আরো বেড়ে যায়.,
আর আর তখন যদি আপনি তার কষ্টটা কমানোর জন্য তাকে সাহায্য করতে না পারলেও অন্তত তাকে সাহস দেন বা তার অন্তরে সাহস যোগানোর মতো তার সাথে কোন ভালো আলোচনা করেন বা তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, তখন আপনার এই সান্তনাটুকুই হতে পারে তার বিপদে আপনার পক্ষ থেকে তার জন্য একটা সাহায্য।
আর আমাদের পার্থিব এই জগতে চলাফেরা করার ক্ষেত্রে সুখ দুঃখ থাকবেই এই ক্ষেত্রে খুব ধনী আর গরিবের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, কেউ হয়তো কিছু পাওয়ার দুঃখ নিয়ে জীবন পার করে কেউ বা কিছু হারিয়ে তার জীবন শেষ করে কেউ জীবন পার করে আক্ষেপে আর কেউ জীবন পার করে অন্যের অনুপ্রেরণায় আবার কেউবা তার জীবনকে শেষ করে দেয় অন্যকে অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়ে, এই হিসেবে দুঃখ সবারই থাকে কারো টাকা-পয়সার বা কারো সম্পর্কের,
ঠিক এই দুঃখগুলোই মানুষ একে অন্যকে বলে সান্ত্বনা পেতে চাই কিন্তু সবাই কি সান্ত্বনা দিতে পারে?
বা সবাইকে কি নিজের মনের দুঃখটা প্রকাশ করতে পারে?
আমার মনে হয় না যে সব সময় সব দুঃখ সবাইকে শেয়ার করা যাই. কারণ আমি এমন ও দেখেছি কেউ কারোকে খুব আপনমনে নিজের দুঃখটা শেয়ার করেছে কিন্তু যাকে দুঃখবলেছে সে আবার অন্যে জায়গায় গিয়ে তার অন্য নিকটতম কারোকে বলে আনন্দ নিচ্ছে।
লোকে ভুলেই যাচ্ছে সে কি করছে সে একত আমানতের খেয়ানত করছে দ্বিতীয়ত সে বন্ধত্বের ও বিস্বাসতা নষ্ট করছে। তাই নিজের দুঃখ কষ্ট একান্ত নিজের মধ্যে রাখা আর সৃষ্টি কর্তার কাছে সাহায্য চাওয়া।
তাও যদি কাউকে বলতে ইচ্ছা করে একান্ত নিজের পরিবার বা খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড হলে তাকে বলা যে তার বিপদে তাকে সাহায্য করতে পারবে তার খারাপ দিকগুলো চিন্তা না করে।
সব থেকে উত্তম হলো খারাপ এবং ভালো সময় উভয়টাতেই আল্লাহকে বন্ধু বানানো আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া আবার আল্লাহকে ধন্যবাদ জানানো।
কুরআনে আল্লাহ তাঁয়ালা বন্দাকে বলেছেন:--
“তুমি আমার বান্দাদের বলে দাও, তারা যেন সবচেয়ে উত্তম কথা বলে।”
(সূরা বনি ইসরাঈল: ৫৩)
কারো সাথে সম্পর্ক দৃঢ় হয় তখন যখন তার সাথে আমাদের ব্যবহার সুন্দর ও সম্মানজনক হয়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমনও দেখা যায় যে আত্মীয়তার সম্পর্ক না কিন্তু আত্মীয়তার থেকেও বেশি এমন কিছু আত্মীয় হয়ে যায় আমাদের হয় বোন না হয় খালা না হয় ফুফু যাদের সাথে আমাদের রক্তের কোন সম্পর্ক থাকেনা, সে সম্পর্কটা হয় শুধু আমাদের ব্যবহারের কারণে, অনেক সম্পর্ক এমন হয়ে যায় যে মৃত্যুর দিনও ব্যবহারিত সম্পর্ক গুলোই আগে এগিয়ে আসে, ধরুন আপনি কোথায় বাসা ভাড়া বা পরিবার ছাড়া থাকেন, আপনার পরিবার আপনার থেকে দূরে তখন আপনার কোন বিপদ-আপদ হলে কারা আগে এগিয়ে আসবে অবশ্যই আপনার প্রতিবেশী তো এই প্রতিবেশীগুলো কি আমাদের রক্তের সম্পর্কের কোন আত্মীয় হয় অবশ্যই না..! তাহলে তারা আপনার বিপদে কেন আগে এগিয়ে আসবে?
এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যবহারের কারণেই আসবে, তাই মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করা, ব্যবহারের মাধ্যমে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে।
হোক সেটা পরিবারের সাথে না হয় নিজের ছেলে মেয়ের সাথে বা স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের সাথে, সব সম্পর্কের মূল হল ভাল ব্যবহার, কারো কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ছোট্ট একটা দোয়া বা জাযাকাল্লাহ বলে তাকে খুশি করা, বা আপনার ছোটখাটো ভুলের কারণে তাকে অফয়ান বলে ক্ষমা চাওয়া, ছোট ছোট ব্যবহার মানুষের জীবনে অনেক বড় প্রভাব ও ফেলবে আপনার এই ব্যবহারে।
কারো সাথে আপনার ভালো ব্যবহার হতে পারে তার মানসিক সুস্থতার কারণ ও প্রেরনা,যেমন আমরা যখন ছোটদেরকে পড়াতে যাই সে হাজারো ভুল করুক যখন তাকে আদর করে একটু প্রশংসা দিয়ে তাকে ভালো কিছু বোঝানো হয় তখন তার হাজারো খেলার মন থাকলেও সে আপনার কথা অবশ্যই শুনবে কারণ তার তখন ভালো লাগবে আর সেই সময়টাতেই আপনি তাকে ভালো ভালো উপদেশ দিতে পারবেন তাকে অনেক বড় স্বপ্ন দেখাতে পারবেন তাকে উৎসাহিত করতে পারবেন তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুই এক লাইন আশা বাড়াতে কথা তাকে খুব খুশি ও খুব বেশি আনন্দিত করতে পারে, পড়া লিখাতে aro আগ্রহ বেড়ে যাই।
ঠিক তেমনি খারাপ কথার প্রভাবও মানুষকে নষ্ট করে ও নষ্ট করে দেয় তার আগ্রহ।
খারাপ ব্যবহার ভালো সম্পর্কে কেউ নষ্ট করে দেয়।পানষ্ট করে দেয় স্বামী-স্ত্রীর সুন্দর বন্ধন কেও পরিবারিক সাথে করে দেয় দূরত্ব।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“মুমিন গালিগালাজকারী, কটু ভাষী, অশ্লীল ভাষী বা অভিশাপকারী হয় না।”
(তিরমিজি)
কিন্তু এখন তো দেখা যায় মানুষ দুষ্টামির করে করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে আর সে ভুলে যায় যে তার ধর্মে দুষ্টামি করেও অশ্লীল ভাষা বলা যায় না।
কারণ খারাপ ব্যবহার অনেক সময় আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয়। এটা আল্লাহর কাছেও অপছন্দনীয়
কুরআনে বলা হয়েছে:
“সুন্দর কথা আর ক্ষমা, দান-সদকা যার পরে কষ্ট দেওয়া হয় তার চেয়ে উত্তম।”
(সূরা বাকারা: ২৬৩)
অর্থাৎ যারা মানুষকে দান ছদকা করে আর মানুষকে সাহায্য করার পরে সেই সাহায্য নিয়ে তাকে আবার খোটা দেয়, এমন দান সদকা বা সাহায্য আল্লাহর কাছে মূল্যহীন হয়ে যায়।
আর এমন দান সদকা থেকে ও উত্তম যদি আপনি কারো সাথে সুন্দর ব্যবহার ও তার ভুল কে ক্ষমা করে দেন।
আজ পর্যন্ত যত ভালো সম্পর্কই নষ্ট হয়েছে তার পিছনের কারণ যদি খুঁজা হয় তাহলে দেখা যাবে বেশির ভাগ কারণই খারাপ ব্যবহার।
তাই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে কিভাবে ভালো ব্যবহার করা যায়, আর ছোট বড় যাই বলেন না কেন মানুষ সেটাই অনুগত্য বা অনুসরণ করার চেষ্টা করে যেটা সে চোখের সামনে দেখে, ঠিক একটা ছোট বাচ্চার মতো, যেমন ছোটরা সব সময় তাকিয়ে থাকে তার বড় ওরা কিভাবে চলাফেরা করে, কিভাবে খায় কার সাথে কিভাবে ব্যবহার করে ইত্যাদি বিষয় পরে তারা এটাকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে।
তাই আমরা যখন আমাদের সামনে কারকে দেখব তখন তাকে সালাম দিবো, নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট ভালো কাজ করার অভ্যাস করবো।
ছোটদের প্রতি স্নেহপূর্ণ ভাষায় ব্যবহার করবো সব সময়।
ছোট বড় সকলের ভুলগুলো ক্ষমা করবো।
কারো ভালো কাজের প্রতি উৎস ও প্রশংসা করার ক্ষেত্রেকখনো কৃপণতা না করা।
কারো প্রতি খুব বেশি রাগ বা ক্ষেপে গেলেও কঠিন শব্দ ব্যবহার না করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“মানুষ সকালে ঘুম থেকে জাগলে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জিহ্বার কাছে অনুনয় করে— ‘আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো, আমরা তো তোমারই অনুসারী। তুমি সোজা থাকলে আমরাও সোজা থাকব, তুমি বেঁকে গেলে আমরাও বেঁকে যাব।
(তিরমিজি)
আমাদের উচিত সব সময় কথা বলার আগে খুব চিন্তা করে কথা বলা, আমাদের মুখের ব্যবহার আমাদেরকে মূর্খ বানিয়ে দেয় আবার আমাদের মুখের ব্যবহারই আমাদেরকে শিক্ষার উঁচু স্থানে এস্থানে দেয়।
আমার কথা কি কারোকে আঘাত করছে?
আমার এই কথা কি আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য.?
ভালো কথা তো সদকা।
আর কটু কথা তো গোনাহ।
আর মাঝে মাঝে চুপ থাকা ও ইবাদত যদি ভালো কিছু বলার না থাকে।
ভালো কথা মানুষের জীবন আলোয় আলোকিত করে, আর খারাপ কথা মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়।
তাই আমাদের উচিত কথা বললে সবসময় ভেবে কথা বলা
খারাপ কথা থেকে আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুক
- Get link
- X
- Other Apps
Popular Posts
- Get link
- X
- Other Apps
চাঁদ রাতের গুরুত্ব ও তার গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment